অনুপাত ও সমানুপাত কাকে বলে ? শ্রেণিবিভাগ, শর্টকাট সূত্র প্রয়োগ
অনুপাত ও সমানুপাত
নমস্কার আপনাকে স্টুডেন্টস কেয়ারে স্বাগতম। আজকে আমরা গণিতের একটু গুরুত্বপুর্ণ বিষয় অনুপাত ও সমানুপাত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আজ আমরা পড়বো অনুপাত কাকে বলে, অনুপাতের ভাগ গুলি কি কি? অনুপাত কিভাবে নির্ণয় করতে হয়, এবং তার সাথে সাথে শিখে নেবো সমানুপাত কী? ও বিস্তারিত। তাহলে শুরু করা যাক!
আরও পড়ো-
- সহস্র শর্টকাট পদ্ধতি গাণিতিক সূত্র সহ বাংলায় লেখা বই PDF Free
- ক্যালেন্ডার অঙ্ক শর্টকাট সূত্র
- ঘড়ির কাঁটার মধ্যবর্তী কোণ নির্ণয় করার শর্টকাট পদ্ধতি
- অনুপাত ও সমানুপাত
- কাজ ও সময় সম্পর্কিত অংকের শর্টকাট সূত্র
- ত্রিকোণমিতির অনুপাতগুলো মনে রাখার টেকনিক
- নৌকা ও স্রোত সংক্রান্ত অংক করার শর্টকাট টেকনিক
- লাভ ক্ষতির অংক করার শর্টকাট টেকনিক
◊ অনুপাত কাকে বলে?
‘অনুপাত’ শব্দের অর্থ “তুলনা করা”। অর্থাৎ, যে সংখ্যা দ্বারা একই জাতীয় বা একই এককবিশিষ্ট্য দুইটি রাশির মধ্যে তুলনা করাকে, অর্থাৎ, একটি অপরটির কতগুণ বা কত অংশ তা প্রকাশ করা হয়, তাকে অনুপাত (ratio) বলে। পাটিগণিতে দুটি বাস্তব সংখ্যার অনুপাতকে একটি ভগ্নাংশের আকারে প্রকাশ করা যায় । ভগ্নাংশের লব ও হর কে যথাক্রমে অনুপাতের পূর্বপদ ( Antecedent ) ও উত্তরপদ ( Consequent ) বলে । রাশি বা সংখ্যা দুইটি সমজাতীয় বলে অনুপাতের কোন একক নেই এবং এর গাণিতিক চিহ্ন ‘:’। অনুপাতের দুটি পদের মধ্যে গ.সা.গু যেন 1 হয় অর্থাৎ অনুপাতকে সবসময় সর্বনিম্ন আকারে প্রকাশ করা হয় । a ও b রাশির দুটির অনুপাতকে a : b আকারে লেখা হয়, এবং পড়া হয় ” a অনুপাত b ” ( a is to b ) .
তাহলে দেখা যাচ্ছে, a:b=ab [b ≠ 0]
একটি উদাহরণ দিয়ে অনুপাতকে বুঝে নেওয়া যাক-
যেমন, অমিতের বয়স আমার ৩ গুণ। এই কথাটি একটি আনুপাতিক সংখ্যা প্রকাশ করে।
আমার বয়সঃ ২৩ বছর
অমিতের বয়সঃ ৬৯ বছর
[আরও পড়ুন- সহস্র শর্টকাট পদ্ধতি গাণিতিক সূত্র সহ বাংলায় লেখা বই PDF Free]
অমিতের বয়স ÷আমার বয়স = ৬৯÷২৩ = ৩
এটিকে লেখা যেতে পারে,
অমিতের বয়স : আমার বয়স = ৬৯ : ২৩ = ৩ : ১
এখন দেখুন, আমরা ৩:১ থেকে লিখতে পারি,
অমিতের বয়স = ৩x বছর
আমার বয়স = x বছর; x এখানে সেই সংখ্যাটি যা দিয়ে ভাগ করে অনুপাতটিকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। ৬৯ : ২৩ = ৩ : ১; এখানে অনুপাতের দুইটি সংখ্যাকে ২৩ দিয়ে ভাগ করা হয়েছে। x = ২৩।
অনুপাতের বৈশিষ্ট্য কী?
- ভাগের সংক্ষিপ্ত রূপই হচ্ছে অনুপাত
- অনুপাতের চিহ্নটি হচ্ছে ।
- অনুপাতের প্রথম রাণিকে পূর্ব রাশি ও পরের রাশিকে উত্তর রাশি বলে।
- অনুপাত করার সময় রাশিগুলোকে এককে প্রকাশ করতে হয়।
- অনুপাতের রাশিগুলোকে অন্য সংখ্যা দিয়ে গুণ বা ভাগ করলে মানের কোন পরিবর্তনই হয় না শুধুমাত্র শূণ্য ছাড়া।
- অনুপাতের ক্ষেত্রে রাশি দুটিকে অবশ্যই সমজাতীয় হতে হবে।
- ভিন্ন জাতীয় রাশির অনুপাত তৈরি সম্ভব না।
- অনুপাতের কোন একক হয় না কারণ রাশি দুটি সমজাতীয় হয়।
⇒ অনুপাত কত প্রকার ও কি কি?
অনুপাতকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১. সরল অনুপাত কাকে বলে?
অনুপাতে দুটি রাশি থাকলে তাকে সরল অনুপাত বলে। সরল অনুপাতের ১ম রাশিকে পূর্ব রাশি এবং ২য় রাশিকে উত্তর রাশি বলে।
যেমন: ৫: ৬ একটি সরল অনুপাত। এখানে ৫ হলো পূর্ব রাশি এবং ৬ হলো উত্তর রাশি।
২. লঘু অনুপাত কাকে বলে?
যে অনুপাতের পূর্বরাশি উত্তর রাশি অপেক্ষা ছোট হয়, তাকে লঘু অনুপাত (ratio of less inequality) বলে। যেমন, ৭: ৯, ৬: ৮ ইত্যাদি।
৩. গুরু অনুপাত কাকে বলে?
কোনো সরল অনুপাতের পূর্ব রাশি বা পূর্বপদ, উত্তর রাশি বা উত্তরপদের থেকে বড় হলে তাকে গুরু অনুপাত (ratio of greater inequality)বলে।
যেমন: ৪: ২, ৯: ৬, ৬: ৪ ইত্যাদি।
৪. একানুপাত বা সাম্যানুপাত কাকে বলে?
যে সরল অনুপাতের পূর্ব রাশি ও উত্তর রাশি সমান, সেই অনুপাতকে একক অনুপাত (ratio of equality) বলে। যেমন: ১১: ১১ বা, ৫: ৫ বা ২: ২। উদাহরণগুলোতে প্রতিটি রাশিই সমান।
৫. ব্যস্ত বা বিপরীত অনুপাত কাকে বলে?
যখন কোনো সরল অনুপাতের উত্তর রাশিকে পূর্ব রাশি এবং পূর্ব রাশিকে উত্তর রাশি ধরে প্রাপ্ত অনুপাতকে সরল অনুপাতের ব্যস্ত অনুপাত বা বিপরীত অনুপাত (Invers ratio) বলা হয়। যেমন– ১২: ৬ এর ব্যস্ত অনুপাত ৬: ১২।
[ আরও পড়ুন- ত্রিকোণমিতির অনুপাতগুলো মনে রাখার টেকনিক ও সহজ পদ্ধতি]
বৈষম্য অনুপাত কাকে বলে?
যদি কোন অনুপাতের উত্তর রাশি ও পূর্বরাশি অসমান হয়, তখন তাকে বৈষম্য অনুপাত বলা হয়।
যেমন : a : b
৬. মিশ্র বা যৌগিক অনুপাত কাকে বলে?
একাধিক সরল অনুপাতের পূর্ব রাশিগুলোর ধারাবাহিক গুণফলকে পূর্ব রাশি এবং উত্তর রাশিগুলোর ধারাবাহিক গুণফলকে উত্তর রাশি ধরে প্রাপ্ত অনুপাতকে মিশ্র বা যৌগিক অনুপাত (compound ratio) বলে। অন্যভাবে বলা যায়, দুই বা ততোধিক অনুপাতের পূর্বপদগুলির গুণফলকে পূর্বপদ ধরে এবং উত্তরপদগুলির গুণফলকে উত্তরপদ ধরে যে অনুপাত পাওয়া যায়, তাই হল মিশ্র।
যেমন: ৫:৩, ৭:৯, ১১:৪ তিনটি অনুপাত হলে,
পূর্ব রাশিগুলোর ধারাবাহিক গুণফল=৫ x ৭ x১১= ৩৮
উত্তর রাশিগুলোর ধারাবাহিকক গুণফল=৩ x ৯ x ৪= ১০৮
অতএব, অনুপাত গুলোর মিশ্র অনুপাত=৩৮৫ : ১০৮
৭. দ্বিগুণানুপাত কাকে বলে?
যেকোনো সরলঅনুপাতের পূর্বরাশি ও উত্তররাশিকে বর্গ করলে যে অনুপাত পাওয়া যায় তাকে দ্বিগুণানুপাত বলে।
যেমন– ৪ : ৭ এর দ্বিগুণাপাত হল ৪২ : ৭২ = ১৬ : ৪৯।
ত্রিগুণানুপাত কাকে বলে?
তিনটি সমান অনুপাতের যৌগিক অনুপাতকে যে কোনো একটি অনুপাতের ত্রিগুণানুপাত (triplicate ratio) বলে।
যেমন- a : b এর ত্রিগুণানুপাত হল a3 : b3
৮. দ্বিভাজিত অনুপাত কাকে বলে?
সরল অনুপাতের পূর্বরাশি ও উত্তর রাশি দুটির বর্গমূল করলে যে অনুপাত পাওয়া যায় তাকে দ্বিভাজিত অনুপাত (sub-duplicate ratio) বলে। যেমন– ২৫ : ৩৬ এর দ্বিভাজিত অনুপাত হল = √২৫ : √৩৬ = √৫২ : √৬২ = ৫ : ৬।
ত্রিভাজিত অনুপাত কাকে বলে?
যে কোনো অনুপাতের পূর্বপদ ও উত্তরপদের ঘনমূল নিয়ে যে অনুপাত পাওয়া যায়, তাকে ওই অনুপাতটির ত্রিভাজিত অনুপাত (sub-triplicate ratio) বলে।
যেমন- a : b-এর ত্রিভাজিত অনুপাত হল 3√a : 3√b
৯. ধারাবাহিক অনুপাত কাকে বলে?
দুটি অনুপাতের মধ্যে প্রথম অনুপাতের উত্তর রাশি ও দ্বিতীয় অনুপাতের পূর্ব রাশি পরস্পর সমান হলে, তাদের ধারাবাহিক অনুপাতে প্রকাশ করা যায়।
যেমন: ৩:৫ ও ৫:৭ দুইটি অনুপাত হলে, এদের ধারাবাহিক অনুপাত হবে ৩ : ৫ : ৭
১০. অনুপাতের গুণ ও ভাগ কাকে বলে?
কোনো অনুপাতে উভয় রাশিকে একই সংখ্যা দ্বারা প্রয়োজনানুযায়ী গুণ ও ভাগ করা যেতে পারে।
যেমন: 5:7 কে লিখতে পারি বা আবার, কে লিখতে পারি, বা
অনুপাত পড়া ও লেখার নিয়ম।
১. ৪:৫ = চার অনুপাত পাঁচ অথবা Four is to five. ৪:৫ = ৪/৫ = ৪ ÷ ৫
২. অনুপাত করার সময় রাশিগুলোকে এককে প্রকাশ করে নিতে হবে।
৩. অনুপাত শুদ্ধ সংখ্যার রাশি তাই এর একক নেই।
৪. ভিন্ন জাতীয় রাশির অনুপাত তৈরি সম্ভব নয়।
৫. ০ ছাড়া অনুপাতের রাশি দুটিকে যে কোন সংখ্যা দিয়ে গুণ অথবা ভাগ করলে তার মানের কোন পরিবর্তন হয় না।
◊ অনুপাতের রূপান্তর
অনুপাতের রাশিগুলো ধনাত্মক।
১। হলে, [ ব্যস্তকরণ (invertendo)]
২। হলে, [একান্তরকরণ (alternendo)]
৩। হলে, [যোজন (componendo)]
৪। হলে, [বিয়োজন (dividendo)]
৫। হলে, [যোজন-বিয়োজন (componendo-dividendo)]
৬। হলে, প্রত্যেকটি অনুপাত ।
◊ ধারাবাহিক অনুপাত
দুইটি অনুপাত যদি এবং আকারের হয়, তাহলে তাদেরকে আকারে লেখা যায়। একে ধারাবাহিক অনুপাত বলা হয়। যেকোনো দুই বা ততোধিক অনুপাতকে ধারাবাহিক অনুপাত আকারে প্রকাশ করা যায়।
দুইটি অনুপাতকে ধারাবাহিক অনুপাত আকারে প্রকাশ করতে হলে, ১ম অনুপাতটির উত্তর রাশি, ২য় অনুপাতটির পূর্ব রাশির সমান করতে হবে। অর্থাৎ ঐ দুইটি রাশিকে তাদের ল.সা.গু. এর সমান করতে হবে।
উদাহরণ:
এবং কে ধারাহিক অনুপাতে প্রকাশ।
১ম অনুপাতের উত্তর রাশি ও ২য় অনুপাতের পূর্ব রাশি হবে ও এর ল.সা.গু. অর্থাৎ
এবং
সুতরাং ধারাবাহিক অনুপাতটি হবে ।
[আরও পড়ুন- লাভ ক্ষতির অংক করার শর্টকাট টেকনিক]
◊ অনুপাতের অঙ্ক করার শর্টকাট পদ্ধতি
উদাহরণ-১ একটি সোনার গহনার ওজন ১৬ গ্রাম।এতে সোনা ও তামার অনুপাত ৩:১। এতে কি পরিমান সোনা মিশালে অনুপাত ৪:১ হবে?
সোনা:তামা = ৩:১
অনুপাতে সংখ্যা দুটির যোগফল, (৩+১) = ৪
সুতরাং মিশ্রণে সোনার পরিমাণ = ১৬ x ৩/৪= ১২ গ্রাম
মিশ্রণে তামার পরিমান = ১৬ x ১/৪ = ৪ গ্রাম
এখন মিশ্রণে সোনা মিশানো হবে, তার মানে তামা যা আছে তাই থাকবে অর্থাৎ ৪ গ্রামই থাকবে। নতুন মিশ্রণে সোনা ও তামার অনুপাত হবে, ৪:১।
মানে হল, সোনা তামার ৪ গুণ হবে= (৪ গ্রামx৪) = ১৬ গ্রাম হবে।
সুতরাং অতিরিক্ত সোনা মিশাতে হবে (১৬-১২) = ৪ গ্রাম
উদাহরণ-২ একটি কুকুর একটি খরগোশকে ধরার জন্য তারা করে। কুকুর যে সময় ৪ বার লাফ দেয় খরগোশ সে সময়ে ৫ বার লাফ দেয়। কিন্তু খরগোশ ৪ লাফে যত দূর যায়, কুকুর ৩ লাফে তত দূর যায়। কুকুর ও খরগোশের গতিবেগের অনুপাত কত?
খরগোশের ৪ লাফ = কুকুরের ৩লাফ
সুতরাং খরগোশের ৫ লাফ = কুকুরের ৩/৪ × ৫ = ১৫/৪ লাফ
সুতরাং কুকুর ও খরগোশের গতিবেগেরঅনুপাত = ৪:১৫/৪ = ১৬:১৫
উদাহরণ-৩ দুটি সংখ্যার অনুপাত ৫:৮।উভয়ের সাথে ২ যোগ করলে অনুপাতটি ২:৩ হয়। সংখ্যা দুটি কি কি?
ধরি সংখ্যা দুটি ৫x ও ৮x
প্রশ্নমতে , (৫x + ২) : (৮x + ২) = ২:৩
বা, (৫x + ২) / (৮x + ২) = ২/৩
বা, ১৬x + ৪ = ১৫x + ৬
বা, x = ২
সংখ্যা দুটি যথাক্রমে,
৫x = ৫ x ২ = ১০ ও
৮x = ৮ x ২ = ১৬
উদাহরণ-৪ একটি সোনার গহনার ওজন ১৬ গ্রাম।এতে সোনা ও তামার অনুপাত ৩:১। এতে কি পরিমাণ সোনা ও তামা আছে?
সোনা ও তামার অনুপাত ৩:১ হলে, ধরি সোনা আছে ৩x গ্রাম এবং তামা আছে x গ্রাম।
প্রশ্নমতে,
৩x + x = ১৬
৪x = ১৬
x= ৪
অর্থাৎ, তামা আছে ৪ গ্রাম
সোনা আছে (৩*৪)গ্রাম = ১২ গ্রাম।
দ্বিতীয় নিয়মঃ
সোনা:তামা = ৩:১
অনুপাতে সংখ্যা দুটির যোগফল, (৩+১) = ৪
সুতরাং মিশ্রণেসোনারপরিমাণ = ১৬ x ৩/৪= ১২গ্রাম
মিশ্রণেতামারপরিমান = ১৬ x ১/৪ = ৪ গ্রাম
◊ সমানুপাত কাকে বলে?
প্রদত্ত চারটি রাশি এমন থাকে যে, প্রথম রাশি ও দ্বিতীয় রাশির অনুপাত তৃতীয় রাশি ও চতুর্থ রাশির অনুপাতের সমান হয়, তাহলে ঐ চারটি রাশি দিয়ে একটি সমানুপাত (proportion) হয়। উদাহরণঃ a, b, c, d রাশি চারটি সমানুপাতী হলে a:b = c:d বা a/b = c/d হবে অর্থাৎ, ad = bc হবে।
সমানুপাতের প্রথম রাশি ও চতুর্থ রাশিকে প্রান্তীয় রাশি (extremes) এবং দ্বিতীয় রাশি ও তৃতীয় রাশিকে মধ্য রাশি (means) বলে। চারটি রাশির প্রত্যেকটিকে সমানুপাতী বলে।
অর্থাৎ, উপরিউক্ত রাশিগুলির a ও d হল প্রান্তীয় রাশি এবং b ও c হল মধ্য রাশি।
◊ ক্রমিক সমানুপাতী কী?
প্রদত্ত তিনটি রাশির প্রথম ও দ্বিতীয় রাশির অনুপাত যদি দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাশির অনুপাতের সমান হলে সমানুপাতটিকে ক্রমিক সমানুপাত বলে। যেমন: a, b ও c তিনটি সমজাতীয় রাশি হলে এবং হলে, উক্ত অনুপাতকে ক্রমিক সমানুপাতী বলে। আবার, a, b ও c ক্রমিক সমানুপাতি হবে যদি হয়।
সমানুপাতের প্রকার গুলি কী কী?
সমানুপাতকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
(১) চতুর্থ সমানুপাতীঃ চারটি পদ সমানুপাতী হলে চতুর্থ পদটিকে প্রথম তিনটি পদের চতুর্থ সমানুপাতী (fourth proportional) বলে।
(২) ক্রমিক সমানুপাতীঃ যদি তিনটি পদের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় পদের অনুপাত এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় পদের অনুপাত সমান হয়, তবে পদ তিনটিকে ক্রমিক সমানুপাতী বলে। উদাহরণ– ২, ৪, ৮ এবং ৩, ৯, ২৭ ক্রমিক সমানুপাতী।
(৩) মধ্য সমানুপাতীঃ তিনটি পদ ক্রমিক সমানুপাতী হলে, মধ্যপদটিকে মধ্য সমানুপাতী বলে।
(৪) তৃতীয় সমানুপাতীঃ তিনটি পদ ক্রমিক সমানুপাতী হলে, তৃতীয় পদকে ওপর দুটি পদের তৃতীয় সমানুপাতী বলে।
লক্ষ করি:
- → সমানুপাতের ১ম ও ৪র্থ রাশিকে প্রান্তীয় রাশি বলে।
- → সমানুপাতের ২য় ও ৩ য় রাশিকে মধ্য রাশি বলে।
- → সমানুপাতে ‘=’ চিহ্নের পরিবর্তে ‘::’ চিহ্নও ব্যবহার করা হয়।
সমানুপাতের সূত্র: সমানুপাতের ১ম রাশি×৪র্থ রাশি = ২য় রাশি×৩য় রাশি।
সমানুপাতের কয়েকটি প্রয়োজনীয় ধর্ম ( Some Important Properties of Proportion ) :
(১) একান্তর প্রক্রিয়া ( Alter nendo ):
a : b = c : d হলে, a : c = b : d হবে
প্রমাণ :
a:b=c:d⇒ab=cd⇒ab×bc=cd×bc⇒ac=bda:b=c:d⇒ab=cd⇒ab×bc=cd×bc⇒ac=bd
[ প্রমাণিত ](২) বিপরীত বা ব্যস্ত-প্রক্রিয়া ( Invertendo )
a : b = c : d হলে, b : a = d : c হবে
প্রমাণ :
ab=cdab=cd
- উভয়পক্ষে abab এবং cdcd দিয়ে ভাগ করে পাই,
1÷ab=1÷cd⇒ba=dc1÷ab=1÷cd⇒ba=dc
অতএব
ab=cd⇒ba=dc∴a:b=c:d⇒b:a=d:cab=cd⇒ba=dc∴a:b=c:d⇒b:a=d:c
[ প্রমাণিত ](৩) যোগ প্রক্রিয়া ( Componendo )
a : b = c : d হলে , ( a + b ) : b = ( c + d ) : d হবে।
প্রমাণ :
a:b=c:d⇒ab=cd⇒ab+1=cd+1⇒a+bb=c+dd⇒(a+b):b=(c+d):da:b=c:d⇒ab=cd⇒ab+1=cd+1⇒a+bb=c+dd⇒(a+b):b=(c+d):d
[ প্রমাণিত ](৪) ভাগ প্রক্রিয়া ( Dividendo )
a : b = c : d হলে, ( a – b ) : b = ( c – d ) : d হবে।
প্রমাণ :
a:b=c:d⇒ab=cd⇒ab−1=cd−1⇒a−bb=c−dd⇒(a−b):b=(c−d):da:b=c:d⇒ab=cd⇒ab−1=cd−1⇒a−bb=c−dd⇒(a−b):b=(c−d):d
(৫) যোগ-ভাগ প্রক্রিয়া ( Componendo and Dividendo )
a : b = c : d হলে, ( a + b ) : ( a – b ) = ( c + d ) : ( c – d ) হবে
প্রমাণ :
a:b=c:da:b=c:d
⇒ab=cd⇒ab=cd [যোগ ও ভাগ প্রক্রিয়া করে পাই ]
⇒a+ba−b=c+dc−d
⇒(a+b):(a−c)=(c+d):(c−d)⇒(a+b):(a−c)=(c+d):(c−d)
[প্রমাণিত ]বিকল্প প্রমাণ :
মনে করি
ab=cd=kab=cd=k
অতএব a = bk এবং c = dk
এবার
a+ba−b=bk+bbk−b=k+1k−1a+ba−b=bk+bbk−b=k+1k−1
আবার
c+dc−d=dk+ddk−d=k+1k−1c+dc−d=dk+ddk−d=k+1k−1
∴a+ba−b=c+dc−d∴a+ba−b=c+dc−d
(৬) সংযোজন প্রক্রিয়া ( Addendo )
দুই বা ততোধিক সমান অনুপাতের পূর্বপদের যোগফলকে পূর্বপদ এবং উত্তরপদের যোগফলকে উত্তরপদ নিয়ে প্রান্ত অনুপাতের মান পূর্বোক্ত অনুপাতের মানের সমান হয়। এই প্রক্রিয়াকে সংযোজন প্রক্রিয়া বলে।
a : b = c : d = e : f হলে, প্রতিটি অনুপাতের মান ( a + c + e ) : ( b+ d + f ) হবে, অর্থাৎ
ab=cd=ef=a+c+eb+d+fab=cd=ef=a+c+eb+d+f
সাধারণভাবে
ab=cd=ef=.........=a+c+e+........b+d+f+.......ab=cd=ef=………=a+c+e+……..b+d+f+…….
প্রমাণ :
মনে করি
ab=cd=ef=kab=cd=ef=k
অতএব a = bk , c = dk , e = fk
এবার
a+c+eb+d+f=bk+dk+fkb+d+f=k(b+d+f)(b+d+f)=k
∴ab=cd=ef=k=a+c+eb+d+fa+c+eb+d+f=bk+dk+fkb+d+f=k(b+d+f)(b+d+f)=k
∴ab=cd=ef=k=a+c+eb+d+f
( প্রমাণিত )
মন্তব্য :
ab=cd=ef=..........=a+c+e+.........b+d+f+........,[b,d,f,.......≠0]
আরও পড়ো-
- সহস্র শর্টকাট পদ্ধতি গাণিতিক সূত্র সহ বাংলায় লেখা বই PDF Free
- ক্যালেন্ডার অঙ্ক শর্টকাট সূত্র
- ঘড়ির কাঁটার মধ্যবর্তী কোণ নির্ণয় করার শর্টকাট পদ্ধতি
- অনুপাত ও সমানুপাত
- কাজ ও সময় সম্পর্কিত অংকের শর্টকাট সূত্র
- ত্রিকোণমিতির অনুপাতগুলো মনে রাখার টেকনিক
- নৌকা ও স্রোত সংক্রান্ত অংক করার শর্টকাট টেকনিক
- লাভ ক্ষতির অংক করার শর্টকাট টেকনিক
সমানুপাত সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর
অনুপাত ও সমানুপাত সপ্তম শ্রেণী, Ganit Prabha Class 7 Koshe Dekhi 2.1|অনুপাত কষে দেখি ২.১, অনুপাত এবং অনুপাত অধ্যায় 9 আরডি শর্মা সমাধান, কষে দেখি 2.2 class 7, সপ্তম শ্রেণীর অনুপাত, কষে দেখি 2.1 class 7, কষে দেখি 2.3 class 7, ৭ম শ্রেণির গণিত ২.১ এর সমাধান, গণিত প্রভা সপ্তম শ্রেণি সমাধান pdf, অনুপাত ও সমানুপাত অষ্টম শ্রেণি, অনুপাত সমানুপাত সমাধা, অনুপাত ও সমানুপাত practice set, অনুপাত ও সমানুপাত pdf
Pingback: H.C.F and L.C.M Solution in Bengali PDF | গ.সা.গু. ও ল.সা.গু. অঙ্ক সমাধান
Pingback: নৌকা ও স্রোত সংক্রান্ত অংক করার শর্টকাট টেকনিক || জানতেই হবে সকলকে