ক্যান্টন বাণিজ্য কী? ক্যান্টন বাণিজ্যের বৈশিষ্ট্য? এই বাণিজ্যের অবসানের কারণ?

পোস্টটি শেয়ার করুন
5/5 - (1 vote)

আজকে ২০১৯ সালের উচ্চমাধ্যমিকে ইতিহাস বিষয়ে আসা বড়ো প্রশ্নের উত্তর গুলি নিয়ে আলোচনা করা হল। আজকের দ্বাদশ শ্রেণির তৃতীয় অধ্যায় ঔপনিবেশিক আধিপত্যের প্রকৃতি অধ্যায়ের প্রশ্ন হল ক্যান্টন বাণিজ্যের বৈশিষ্ট্য গুলি কী ছিল? এই বাণিজ্যের অবসান কেন ঘটে? উত্তরটি নিচে দেওয়া হল-

ক্যান্টন বাণিজ্য কী? ক্যান্টন বাণিজ্যের বৈশিষ্ট্য? এই বাণিজ্যের অবসানের কারণ?

উত্তরঃ

ক্যান্টন বাণিজ্য কী?

প্রাচীন যুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত ক্যান্টন ছিল চিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র। নানকিং-এর সন্ধির (১৮৪২ খ্রি.) আগে পর্যন্ত গােটা চিন বিদেশিদের কাছে রুদ্ধ থাকলেও একমাত্র ক্যান্টন ছিল বিদেশিদের কাছে উন্মুক্ত বন্দর। চিনা আদালত ১৭৫৯ খ্রিস্টাব্দে এক নির্দেশনামার দ্বারা একমাত্র ক্যান্টন বন্দরকেই বিদেশি বাণিজ্যের জন্য খুলে দেয়। এভাবে ক্যান্টন বন্দরকে কেন্দ্র করে চিনে বিদেশিদের এক বন্দরকেন্দ্রিক যে বাণিজ্য প্রথার সূচনা হয় তা ‘ক্যান্টন বাণিজ্য প্রথা’ নামে পরিচিত। এই প্রথা ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে নানকিং-এর সন্ধি স্বাক্ষরিত হওয়ার আগে পর্যন্ত চলে। ক্যান্টনের বাণিজ্যে প্রথম পর্বে পাের্তুগিজরা এবং পরে ব্রিটেনসহ অন্যান্য ইউরােপীয় জাতিগুলি নিজেদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করে।

ক্যান্টন বাণিজ্যের বৈশিষ্ট্য:

ক্যান্টন বাণিজ্যের বৈশিষ্ট্য গুলি নিম্নরূপ-

Join us on Telegram

(1) বণিকদের ওপর নিয়ন্ত্রণ

ক্যান্টন বন্দরে বিদেশি বণিকরা হং নামে চিনা ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ব্যাবসা করতে বাধ্য ছিল। এরা সম্মিলিতভাবে কোহং নামের একটি গিল্ড তৈরী করে ক্যান্টন বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করত, এবং এই গিল্ড সরাসরি চিনা সম্রাটের অধীনে ছিল।

(2) কোহং-দের দুর্নীতি:

ক্যান্টন ব্যাবসার মূল নিয়ন্ত্রণ কোহং-দের হাতে থাকায় এরা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। চিনা প্রশাসন, রাজকর্মচারীদের ঘুষ দেওয়ার মাধ্যমে তারা ক্যান্টনে বৈদেশিক বাণিজ্যের শর্তাবলী নির্ধারণের অধিকার লাভ করে।

(3) বুদ্ধদ্বার নীতি:

ক্যান্টন ব্যাবসার সূত্রে বিদেশী ব্যাবসায়ীরা যাতে চিনে ‘আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে তার জন্য বিদেশী ব্যাবসায়ীদের ওপর বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরােপ করা হয়েছিল। যেমন বিদেশী ব্যাবসায়ীদের চিনা ভাষা শিক্ষা, চিনা দাসদাসী নিয়ােগ, চিনা পালকি ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল। এমনকি বিদেশী ব্যাবসায়ীদের চিনের দেওয়ানি এবং ফৌজদারি আইন মানতে বাধ্য করা হত এই সকল নীতিকে ‘রুদ্ধার নীতি (Closed Door Policy) বলা হয়

ক্যান্টন বাণিজ্যের অবসানের কারণ

ক্যান্টন বাণিজ্যের অবসানের কারণগুলি হল নিম্নরূপ-

(i) চিনের বাণিজ্য সম্পর্কে রুদ্ধদ্বার নীতি ছিল ইউরােপের ব্যাবসায়ীদের কাছে অসুবিধের এবং অপমানজনক। এই কারণে ইউরােপের ব্যাবসায়ীরা চিনা সরকারের এই নিয়ন্ত্রণকে শিথিল করার জন্য বদ্ধপরিকর ছিল।

(ii) ব্রিটিশ সরকার ক্যান্টন বাণিজ্যের শর্তাবলী ও নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার জন্য চিন সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হলে ব্রিটিশ সরকার চিনকে যুদ্ধে জড়িয়ে দেয় এবং ১৮৪২ সালে স্বাক্ষরিত নানকিং চুক্তি অনুযায়ী চিনা সরকার সাংহাই, অ্যাময়, নিংপাে, এবং ফুচাও বন্দর বিদেশী ব্যাবসায়ীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়।

(iii) ১৮৫৯ সালের পর থেকে ক্যান্টন বন্দরে ব্রিটিশদের ব্যাবসা বাণিজ্যের কোনাে কাজ হত না, সেই কাজ চলত হংকং-কে কেন্দ্র করে। বেজিং, গ্র্যান্ড ক্যানাল এবং পীত নদী থেকে হংকং-এ নিকটত্ত্ব পশ্চিমের ব্যাবসায়ীদের কাছে তার গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছিল।

প্রথম আফিন যুদ্ধে ব্রিটেনের জয়লাভ ক্যান্টন ব্যাবসার অবসানের প্রধান কারণে পরিণত হয়েছিল।

উচ্চমাধ্যমিক ২০১৯ ইতিহাসের অন্যান্য প্রশ্ন ও উত্তর গুলি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করো

উচ্চমাধ্যমিকের বিগত বছরের প্রশ্ন ও উত্তর PDF ডাউনলোড করার জন্য এখানে ক্লিক করো।

Source: wbchse.nic.in

Students Care

স্টুডেন্টস কেয়ারে সকলকে স্বাগতম! বাংলা ভাষায় জ্ঞান চর্চার সমস্ত খবরা-খবরের একটি অনলাইন পোর্টাল "স্টুডেন্ট কেয়ার"। পশ্চিমবঙ্গের সকল বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের এবং সমস্ত চাকুরী প্রার্থীদের জন্য, এছাড়াও সকল জ্ঞান পিপাসু জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিবর্গদের সুবিধার্থে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: স্টুডেন্টস কেয়ার কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত !!