স্বাভাবিক ক্ষয়চক্র তত্ত্বটি আলোচনা করো | HS Geography PDF

পোস্টটি শেয়ার করুন
5/5 - (1 vote)

আজকে ২০১৫ সালের উচ্চমাধ্যমিকে ইতিহাস বিষয়ে আসা বড়ো প্রশ্নের উত্তর গুলি নিয়ে আলোচনা করা হল। আজকের প্রশ্ন হল স্বাভাবিক ক্ষয়চক্র তত্ত্বটি আলোচনা করো উত্তরটি নিচে দেওয়া হল-

স্বাভাবিক ক্ষয়চক্র তত্ত্বটি আলোচনা করো

মার্কিন ভূ-বিজ্ঞানী উইলিয়াম মরিস ডেভিস নদীর বা স্বাভাবিক ক্ষয়চক্রেকে তিনটি পর্যায়ে বা অবস্থায় ভাগ করেছে। এগুলি হল ― (ক) যৌবন অবস্থা, (খ) পরিণত অবস্থা, (গ) বার্ধক্য অবস্থা।

যৌবন অবস্থা ও সৃষ্ট ভূমিরূপ–

ডেভিসের মতে ভূমিভাগের উত্থান শেষ হওয়ার ঠিক পর থেকেই যৌবন অবস্থা শুরু হয় এবং নদীর ক্ষয়কাজ শুরু হয়। এই অবস্থায় নদীর প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ভূমিরূপ হল—

(i) অনুগামী নদী ও অন্যান্য নদীর সৃষ্টি—

নবোথিত ভূমিতে প্রাথমিক ঢাল অনুসারে অল্পসংখ্যক অনুগামী নদী ও উপনদীর সৃষ্টি হয়।

Join us on Telegram

(ii) V-আকৃতির উপত্যকা—

সমুদ্রতল থেকে ভূমির উচ্চতা অধিক এবং ভূমির ঢাল বেশি থাকায় নদীর নিম্নক্ষয় অধিক দ্রুত হারে হয়। ফলে নদী উপত্যকা সংকীর্ণ ‘V’আকৃতি ধারণ করে।

(iii) বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি—

প্রধান নদীর পাদদেশে আবাছাই করা পদার্থসমূহ সঞ্চিত হয়ে যে ভূমিভাগের সৃষ্টি হয়, তাকে পলল ব্যজনী বলে। দুটি অনুগামী নদীর মধ্যবর্তী স্থানে নদী বিভাজিকা প্রশস্ত ও আনুভূমিকভাবে অবস্থান করে।

(iv) পর্যায়িত ঢাল সৃষ্টির প্রবণতা—

কঠিন ও নরম শিলার সংযোগস্থলে বিভেদমূলক ক্ষয়কাজে নদীবক্ষে জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়। নদীর ঢাল গঠনে সাধারণ প্রক্রিয়া কাজ করায়, ঢালের বিচ্যুতি কমতে থাকে এবং পর্যায়িত ঢালে পরিণত হওয়ার প্রবণতা দেখা যায় ।

(খ) পরিণত অবস্থা ও সৃষ্ট ভূমিরূপ –

ভূমিভাগের উত্থানপর্ব চলাকালীন ক্ষয় কাজের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ যখন একেবারে মুছে যায়, তখন ক্ষয়চক্রটি পরিণত অবস্থায় পৌছোয়। এই পর্বে সৃষ্ট প্রধান ভূমিরূপগুলি হল—

(i) ক্রমবর্ধমান ক্ষয়প্রাপ্ত শৈলশিরা—

আবহবিকার ও ক্ষয়ের ফলে শৈল্যশিরাগুলির উচ্চতা কমতে থাকে। এই পর্যায়ে পার্শ্বক্ষয় বৃদ্ধি পায়। (ii) সুসংহত জলনির্গম প্রণালী— নদী উপত্যকাগুলির মস্তকদেশ সুপ্রশস্থ হয় এবং পরস্পর যুক্ত উপনদীগুলি সুসংহত জলনির্গম প্রণালী গড়ে তোলে।

(iii) সুস্পষ্ট নদী বিভাজিকার সৃষ্টি—

নদী বিভাজিকাগুলি সুস্পষ্ট এবং তীক্ষ্ণ শৈলশিরার মতো অবস্থান করে।

(iv) নদীবাঁক ও প্লাবনভূমির সৃষ্টি—

ভূমিভাগের ঢাল হ্রাস পাওয়ায় নদী আঁকাবাঁকা পথে প্রবাহিত হয়ে নদী বাঁকের সৃষ্টি করে। বন্যার ফলে নদীর দুপাশে নিচু অংশে পলি ভরাট হয়ে প্লাবনভূমির সৃষ্টি হয়। পার্শ্বক্ষয় বাড়ে বলে নদী উপত্যকা চওড়া হয়। নদী উপত্যকা ক্রমশ পর্যায়িত ঢাল সৃষ্টি করে।

(গ) বার্ধক্য অবস্থা সৃষ্ট ভূমিরূপ—

নদী উপত্যকার নিম্নক্ষয় বন্ধ হওয়ার সময় থেকে বার্ধক্য অবস্থা শুরু হয়। এই পর্যায়ে উপত্যকার পার্শ্বক্ষয় এবং প্রশস্থকরণ চলতে থাকে। বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ভূমিরূপগুলি হল—

(i) প্রশস্থ V আকৃতির উপত্যকা—

বার্ধক্য অবস্থায় উপত্যকার প্রশস্থিকরণের কাজ চলতে থাকায়, উপত্যকার আকৃতি চওড়া ‘V’ এর মতো হয় ।

(ii) উপনদীর সংখ্যা হ্রাস —

জলবিভাজিকার উচ্চতা ক্রমশ কমতে থাকায়, নদী গ্রাসের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ফলে উপনদীর সংখ্যা কমতে থাকে। এই অবস্থায় নদী বড়ো বড়ো বাঁকের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং প্রশস্থ প্লাবনভূমির সৃষ্টি করে। প্লাবনভূমিতে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ ও জলাভূমির সৃষ্টি হয়।

(iii) সমপ্রায়ভূমি ও মোনাডনকের সৃষ্টি —

পরিশেষে সমুদ্রপৃষ্ঠের নিকটবর্তী এক বিশাল তরঙ্গায়িত প্লাবনভূমি বা সমপ্রায়ভূমির সৃষ্টি হয়। এই সমপ্রায়ভূমিতে দাঁড়িয়ে থাকা অবশিষ্ট পাহাড় বা টিলাকে মোনাডনক বলে। বার্ধক্য অবস্থায় শেষে সমগ্র অঞ্চলটি সমুদ্রপৃষ্ঠের তলের সঙ্গে একই তলে অবস্থান করায় ক্ষয়কাজ শেষ হয় ।

উচ্চমাধ্যমিক ২০১৫ ইতিহাসের অন্যান্য প্রশ্ন ও উত্তর গুলি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করো

উচ্চমাধ্যমিকের বিগত বছরের প্রশ্ন ও উত্তর PDF ডাউনলোড করার জন্য এখানে ক্লিক করো।

Source: wbchse.nic.in

Students Care

স্টুডেন্টস কেয়ারে সকলকে স্বাগতম! বাংলা ভাষায় জ্ঞান চর্চার সমস্ত খবরা-খবরের একটি অনলাইন পোর্টাল "স্টুডেন্ট কেয়ার"। পশ্চিমবঙ্গের সকল বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের এবং সমস্ত চাকুরী প্রার্থীদের জন্য, এছাড়াও সকল জ্ঞান পিপাসু জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিবর্গদের সুবিধার্থে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: স্টুডেন্টস কেয়ার কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত !!