জলনির্গম প্রণালীর সাথে তার নীচস্থ ভূ-তাত্ত্বিক গঠনের সম্পর্ক উদাহরণ সহ ব্যাখ্যা করো
আজকে ২০১৫ সালের উচ্চমাধ্যমিকে ইতিহাস বিষয়ে আসা বড়ো প্রশ্নের উত্তর গুলি নিয়ে আলোচনা করা হল। আজকের প্রশ্ন হল জলনির্গম প্রণালীর সাথে তার নীচস্থ ভূ-তাত্ত্বিক গঠনের সম্পর্ক উদাহরণ সহ ব্যাখ্যা করো উত্তরটি নিচে দেওয়া হল-
জলনির্গম প্রণালীর সাথে তার নীচস্থ ভূ-তাত্ত্বিক গঠনের সম্পর্ক
জলনির্গম প্রণালীর সাথে নীচস্থ ভূ-তাত্ত্বিক গঠনের সম্পর্ক –
কোনো অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি, বিভিন্ন প্রকার শিলার বিন্যাস ও কাঠিন্য, ভূমির প্রারম্ভিক ঢাল, ভূগাঠনিক নিয়ন্ত্রণ এবং জলবায়ুর সঙ্গে সম্পর্ক রেখে কোনো নদী গোষ্ঠীর মূলনদী, বিভিন্ন উপনদী, বিভিন্ন শাখা ও প্রশাখা নদী প্রভৃতির বিন্যাসের দ্বারা যে জ্যামিতিক নকশা গড়ে ওঠে, তাকে জলনির্গমন প্রণালী বলে।
বিভিন্ন ধরনের জলনির্গমন প্রণালীর সাথে সেই অঞ্চলের নিজস্ব ভূ-তাত্ত্বিক গঠনের সঙ্গে সম্পর্ক কয়েকটি প্রধান জলনির্গমন প্রণালী উদাহরণসহ অলোচনা করা হল-
(ক) বৃক্ষরূপী জলনির্গমন প্ৰণালী—
আর্দ্র জলবায়ু অঞ্চলে সমধর্মী শিলা গঠিত ভূমিভাগে এবং সমান্তরাল শিলাস্তরে ডালপালাযুক্ত গাছের মতো আকৃতি বিশিষ্ট যে জলনির্গমন প্রণালী গড়ে ওঠে, তাকে বৃক্ষরূপী জলনির্গমন প্ৰণালী বলে।
ভূ-তাত্ত্বিক গঠনের সঙ্গে সম্পর্ক—
- (i) এই ধরনের জলনির্গমন প্ৰণালী গড়ে ওঠার জন্য নীচের শিলাস্তরের গঠন ও ভূমির ঢাল সমানভাবে দায়ী।
- (ii) সমধর্মী পাললিক বা আগ্নেয় শিলা সমৃদ্ধ অঞ্চলে বৃক্ষরূপী জলনির্গমন প্রণালী গড়ে ওঠে।
- (iii) এই ধরনের জলনির্গমন প্রণালীতে নদীগুলির ওপর শিলার গঠনগত নিয়ন্ত্রণ বিশেষ থাকে না ।
- (iv) শিলাস্তরের সছিদ্রতা, প্রবেশ্যতা, কাঠিন্য, গ্রথন প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যগুলি জলনির্গম প্রণালীর নদীর সংখ্যা ও দৈর্ঘ্য নিয়ন্ত্রণ করে।
- (v) প্রায় সবধরনের ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চলে বৃক্ষরূপী জলনির্গমন প্রণালী গড়ে উঠতে দেখা যায়।
(খ) জাফরিরূপী জলনির্গমন প্রণালী—
প্রধান নদীর সঙ্গে পরবর্তী, বিপরা পূণর্ভবা নদীগুলি সমকোণে মিলিত হয়ে জাফরি ন্যায় আকৃতিবিশিষ্ট যে নদী বিন্যাস গড়ে তোলে, তাকে জাফরিরূপী জলনির্গমন প্রণালী বলে ।
ভূ-তাত্ত্বিক গঠনের সঙ্গে সম্পর্ক —
- (i) সরল ভাঁজযুক্ত অঞ্চলের ঊর্ধ্বভঙ্গ ও অধোভঙ্গের অবস্থান নদী বিন্যাসকে নিয়ন্ত্রণ করে। দীর্ঘ অধোভঙ্গ উপত্যকা বরাবর অনুগামী নদী প্রবাহিত হয়।
- (ii) এরূপ জলনির্গমন প্রণালীতে শিলাস্তরের আয়াম ও নতি উপনদীর গতিপথকে নিয়ন্ত্রণ করে। পরবর্তী নদীগুলি দুর্বল শিলাস্তরের আয়াম বরাবর প্রবাহিত হয়ে অনুগামী নদীতে মেশে ৷
- (iii) পরস্পর সমান্তরাল উলম্ব ফাটলের ওপর উপনদীগুলি সৃষ্টি হয় বলে এধরনের নদী বিন্যাস গড়ে ওঠে।
- (iv) সমপ্রায় ভূমির কঠিন শিলা দিয়ে গঠিত অংশে কোয়েস্তা ও ভৃগুতট সৃষ্টি করে। নরম শিলা দিয়ে গঠিত নিম্নভূমিতে নদীগুলি পরস্পর সমকোণে মিলিত হয় ।
(গ) কেন্দ্রবিমুখ জলনির্গমন প্রণালী—
যে নদীগুলি দণ্ডের ন্যায় বা সরল রেখার মতো চক্রাকারে কেন্দ্র থেকে বাইরের দিকে প্রবাহিত হয়, তাকে কেন্দ্রবিমুখ জলনির্গমন প্ৰণালী বলে।
ভূ-তাত্ত্বিক গঠনের সঙ্গে সম্পর্ক
- (i) অগ্নেয় পর্বত, গম্বুজাকৃতি পাহাড়, ব্যাথোলিথ, ল্যাকোলিথযুক্ত উচ্চভূমি অঞ্চলের খাড়া ঢালে এই ধরনের নদী বিন্যাস গড়ে ওঠে।
- (ii) উৎস অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি বলে অনুগামী নদীগুলির স্রোত বেশি হয়।
- (ii) অপেক্ষাকৃত কঠিন শিলা দ্বারা গঠিত অঞ্চল থেকে নদীগুলি সৃষ্ট হয় বলে নদীগ্রাসের সৃষ্টি হয় না ।
উচ্চমাধ্যমিক ২০১৫ ইতিহাসের অন্যান্য প্রশ্ন ও উত্তর গুলি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করো
উচ্চমাধ্যমিকের বিগত বছরের প্রশ্ন ও উত্তর PDF ডাউনলোড করার জন্য এখানে ক্লিক করো।
Source: wbchse.nic.in