ভারতে জলবায়ুগত পরিবর্তনের ফলে উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে

পোস্টটি শেয়ার করুন
Rate this post

জলবায়ু পরিবর্তন (Climatic Change) কি ভারতের ওপর প্রভাব ফেলা শুরু করেছে? ভারত কি উষ্ণ হচ্ছে? জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কি ভারতের উষ্ণতা বৃদ্ধি হচ্ছে? স্বাভাবিক পরিবেশ কি বিঘ্নিত হচ্ছে?আমাদের ওপর কি কোনোরকম প্রভাব পরতে চলেছে? উত্তর জানতে হলে অবশ্যই পড়বেন

আমরা সবাই অবগত হয়েছি যে বর্তমান দিনে যেসকল সমস্যা গুলির মধ্যদিয়ে আমরা চলেছি সেগুলর মধ্যে অন্যতম প্রধান সমস্যা হল জলবায়ু পরিবর্তন। সারা পৃথিবী ব্যাপী এই সমস্যায় জর্জতির। এমনকি আমাদের ভারতবর্ষ এই জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।।।  আজকে আমরা সেই বিষয়ে আলচনা করব।

আমরা জানি যে, জলবায়ু পরিবর্তনের ইতিহাস বহুপ্রাচীন। প্রথম জলবায়ু পরিবর্তন লক্ষ করা গিয়েছে ৫৪০ মিলিয়ন বছর পূর্বে প্যালিওযোয়িক যুগে (হিমযুগ ও অন্ত-হিমিযুগে)। ওই সময় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারন ছিল বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনাবলি। কিন্তু বর্তমান দিনে বিশেষত শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যেটা বর্তমান দিনে একটি দানবের রূপ ধারন করেছে।। এক্ষেত্রে মানুষের নিজস্ব ক্রীত কর্মই হল মুখ্য কারন।

বিগত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন গবেষণা ও বিভিন্ন জলবায়ুগত সংস্থার রিপোর্টে যেটা প্রকাশ পাচ্ছে সেটির সারার্থ হল যে, ভারতে (গোটা পৃথিবী সহ) তাপমাত্রা ক্রমশ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।

সম্প্রতি IMD-র রিপোর্টে যেটি প্রকাশ পেয়েছে, সেটি হল, বিগত ১১০ বছরে ভারতবর্ষের উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ০.৬০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এমনকি IMD-র গবেষণাতে এটাও প্রকাশ পেয়েছে যে, Heat Wave, ঘূর্ণিঝড়, অনিয়ন্ত্রিত বৃষ্টিপাতের মত জলবায়ুর চরম তম ঘটনাগুলি বৃদ্ধি পেয়েছে বিগত ৩০ বছরে।

Join us on Telegram

ঠিক একি ভাবে দেখা যাচ্ছে যে, এই বিংশ শতকে বৃষ্টিপাতের যে ধারাবাহিক বণ্টন, সেটিতে ধনাত্মক মান বিরাজ করছে, মুলত পশ্চিম উপকুলবর্তী অঞ্চল এবং উত্তর-পশ্চিম উপ-দ্বীপিয় অংশে।

এমনকি, ২০১৪ সালের IPCC রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে, ১৮৮০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে, গোটা বিশ্বের স্থলভাগ ও সমুদ্রের জলভাগের উপরি তলের তাপমাত্রা মিলিতভাবে ০.৮৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস হারে বৃদ্ধি পেয়েছে (TOI)। এর সঙ্গে পাল্লাদিয়ে ১৯৫০ সালের পর, জলবায়ুর চরম ঘটনাগুলিও ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা (Anil Madhav Dave)। আমরা প্রকৃতির এমন কিছু অস্বাভাবিক কর্মকান্ড দেখেছি যেগুলি দেখার পর মজা লাগললেও এটি এক প্রকার ভয়ঙ্কর সংকেত হিসাবেই ধরা যেতে পারে। এরকমি এক ঘটনা ১৯৭৯ ও ২০১৬ সালে ঘটে যাওয়া পৃথিবীর উষ্ণতম মরুভূমি “সাহারাতে” তুষারপাত!

তাহলে উপায়??

এই সমস্যা থেকে বাঁচার উপায় হিসাবে ভারত সরকার কিছু পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। তার মধ্যে একটি প্রকল্প হল National Action Plan on Climate Change (NAPCC)। যেটি ২০০৮ সালের জুন মাসে চালু হয়েছে, শুধুমাত্র জলবায়ু পরিবর্তনের মত সমস্যার সমাধানের উদ্দেশ্যে।

এই পরিকল্পনাআর বিষয়বস্তুঃ-

NAPCC-র আধীনের এই প্রকল্পে প্রধানত ৮টি বিষয়ের ওপর গুরুপ্ত দেওয়া হয়েছে। সেগুলি হল-

১. সৌরশক্তি উৎপাদন বৃদ্ধি

২. শক্তি সম্পদের গুণগতমাণ ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা

৩. বাসস্থানের সমৃদ্ধি করণ

৪. জল সম্পদের অপচয়রোধ

৫. হিমালয়ের বাস্তুতান্ত্রিক স্থিতিকরন

৬. বনসৃজন

৭. কৃষি এবং

৮. জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে জনসাধারনকে সচেতন করা ইত্যাদি।

এই প্রকল্পের মূলকথাঃ

এই প্রকল্পের মূল কথা হল, গ্রীন হাউস গ্যাস উৎপাদন হ্রাস করে, জলবায়ু পরিবর্ত রোধ করে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা। বন সৃজনের সাথে সাথে সুস্থিত বাসস্থান গড়ে তোলা, এর সাথে উপযুক্ত পরিমানে পানীয় জলের সরবরাহের ব্যবস্থা রেখে কৃষিকার্যে শ্রী বৃদ্ধি ঘটানো।

NAPCC-কে সফল করার জন্য State Action Plan on Climate Change (SAPCC) নামে আরো একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যেখানে সকল রাজ্য গুলি তো থাকবেই, তার সাথে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল গুলিকেও এর আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

অবশেষে বলতে হয়,  এই সমস্যা থেকে বাঁচার উপায় আমরা নিজেরাই।। আমরা সাধারন মানুষ যতদিন পর্যন্ত বুঝতে না শিখব ততদিন পর্যন্ত এই সমস্যা দিনে দিনে আরো বৃদ্ধি পেতে থাকবে।

Students Care

স্টুডেন্টস কেয়ারে সকলকে স্বাগতম! বাংলা ভাষায় জ্ঞান চর্চার সমস্ত খবরা-খবরের একটি অনলাইন পোর্টাল "স্টুডেন্ট কেয়ার"। পশ্চিমবঙ্গের সকল বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের এবং সমস্ত চাকুরী প্রার্থীদের জন্য, এছাড়াও সকল জ্ঞান পিপাসু জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিবর্গদের সুবিধার্থে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: স্টুডেন্টস কেয়ার কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত !!