বাংলা সাহিত্যে সাময়িক পত্রের উদ্ভব ও বিকাশ

পোস্টটি শেয়ার করুন
1.5/5 - (2 votes)

বাংলা সাহিত্যে সাময়িক পত্রের উদ্ভব ও বিকাশ

ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের লেখক গোষ্ঠীর দ্বারা বাংলা গদ্যের চর্চা শুরু হয়ে ছিল, এবং তা ক্রমশ স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে সাময়িকপত্র প্রকাশের মধ্য দিয়ে। আর ছাপাখানার প্রচলনে সাময়িকপত্রের প্রসার ত্বরান্বিত হল। একাধিক লেখকের নানা লেখার সংকলন সাময়িকপত্র বৃহত্তর জনসাধারণের কাছে পৌঁছল পাঠ্য পুস্তকের সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে। ভাষার শক্তি যেমন বাড়ল, তা ক্রমশ সরল ও সর্বজনবোধ্য হতে লাগল। বিভিন্ন সামাজিক বিষয়কে কেন্দ্র করে নানা সময়ে আন্দোলনের ঢেউ সাময়িকপত্রের পৃষ্ঠাতেও লক্ষ করা গেছে, তা হয়ে উঠেছে গণমাধ্যম এবং সমাজ সংস্কারের হাতিয়ার। এছাড়াও বিশিষ্ট সাহিত্যিকদের পটভূমি হিসেবে সাময়িকপত্র তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে এসেছে। সমালোচনা সাহিত্য প্রকাশেও সাময়িকপত্রের অবদান অপরিসীম। শুধু পাঠক এতে সুযোগ্য নির্দেশনা ও পরামর্শ পান তাই নয়, অনেকক্ষেত্রে লেখকও উৎসাহিত হয়ে পরবর্তী রচনায় মনোনিবেশ করে থাকেন। এমনও ঘটেছে, কোনো কোনো সাময়িকপত্রকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী লেখকগোষ্ঠী, যেমন, ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’, তারপরে ‘বঙ্গদর্শন’, এছাড়া আরও পরে বিংশ শতাব্দীতে ‘কল্লোল’, ‘পরিচয়’, ‘শনিবারের চিঠি’ প্রভৃতি কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। জাতির সমস্ত ভালো-মন্দ, আশা-আকাঙ্খা, স্বপ্ন, কল্পনা, হতাশা-প্রাপ্তি, আনন্দ-বেদনার রূপায়ণ সাময়িকপত্রের সূচনা পর্ব থেকেই পত্রপত্রিকার পাতায় প্রতিফলিত হয়ে এসেছে।

বাংলা সাহিত্যে দিগদর্শন মাসিক পত্রিকার ভূমিকা :-

শ্রীরামপুর মিশন থেকে জনক্লার্ক এবং মার্শম্যানের সম্পাদনায় ‘দিগদর্শন‘ মাসিক পত্রিকা প্রকাশের মধ্য দিয়ে সাময়িকপত্রের পথচলা শুরু হয়েছিল। অগণিত সাময়িকপত্রে সাহিত্যের গতিপ্রকৃতি, ঝোঁকবদল, বিভিন্ন সাহিত্য-আন্দোলনের রেখাপাত ঘটেছে। একই সঙ্গে মানুষের পরিবার, ধর্ম, সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতির প্রসঙ্গ এসেছে, নকশা জাতীয় রচনায়-কবিতায়-প্রবন্ধে-আখ্যানে ধরা পড়েছে আশা-আকাঙ্ক্ষা মথিত সামাজিক জীবন। শ্রীরামপুর মিশন থেকেই জে.সি. মার্শম্যানের সম্পাদনায় খ্রিষ্টধর্মের মহিমা প্রচারমূলক ‘সমাচার দর্পণ’ সাপ্তাহিক পত্রিকাটি, ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দের ২৩মে প্রথম প্রকাশিত হয়। প্রায় একই সময়ে হরচন্দ্র রায় এবং গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের সম্পাদনায় ‘বাঙাল গেজেটি’ পত্রিকা প্রকাশিত হয় (প্রথম প্রকাশ ১৪মে, ১৮১৮) যদিও তার কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি। বাংলা ভাষায় সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বাঙালিদের প্রথম উদ্যোগ হিসাবে ‘বাঙাল গেজেটি’ স্মরণীয় হয়ে আছে।

সম্বাদকৌমুদী‘ ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে ৪ ডিসেম্বর রামমোহন রায়ের উদ্যোগে এবং তারাচাঁদ দত্ত, ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুযোগ্য সহযোগিতায় ও সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। একসময়ে ব্রাহ্ম-সমাজের এই মুখপত্রে ধর্ম, রাষ্ট্র, বিজ্ঞান, ঐশ্বরিকতা, দেশ-বিদেশের খবর, উল্লেখযোগ্য চিঠিপত্র প্রকাশিত হত। বাংলা সাহিত্যে রামমোহন রায় ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে ‘ব্রাহ্মণ সেবধি’ পত্রিকা প্রকাশ করেন এবং এই পত্রিকায় ধর্ম ও দর্শন সংক্রান্ত তাঁর বহু রচনা প্রকাশিত হয়। ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮২২ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে গোঁড়া হিন্দুদের মুখপত্র ‘সমাচার চন্দ্রিকা’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। এই পত্রিকায় রামমোহন রায়ের সতীদাহ প্রথা নিবারণের প্রচেষ্টার বিরোধিতা করা হয়। এছাড়াও রঙ্গব্যঙ্গধর্মী, রক্ষণশীল হিন্দু-সমাজের বিবরণমূলক ও সমাজ-সমস্যাসংক্রান্ত বহু লেখা এই পত্রিকায় প্রকাশিত হত।

বাংলা সাহিত্যে বঙ্গদূত পত্রিকার ভূমিকা :-

১৮২৯ খ্রিঃ নীলরত্ন হালদারের সম্পাদনায় ‘বঙ্গদূত‘ পত্রিকা প্রকাশিত হয়। এই সংবাদ-সাপ্তাহিকটির পৃষ্ঠপোষকতা ও পরিচালনার দায়িত্ব বিভিন্ন সময়ে রামমোহন রায়, দ্বারকানাথ ঠাকুর প্রমুখ নিয়েছিলেন। সেকালের রাজনীতি ও অর্থনীতির বিষয় সম্পৃক্ত বহু রচনা এই পত্রিকায় প্রকাশিত হত। ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে কবি ঈশ্বর গুপ্তের সম্পাদনায় ‘সংবাদ প্রভাকর’ প্রকাশিত হয়। ১৮৩২ সালের ২৫ মে’র পর পত্রিকার প্রকাশ বন্ধ হয়ে যায় এবং ১৮৩৬ সালে তা পুনঃ প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটি প্রথমে সাপ্তাহিক, তারপরে সপ্তাহে তিনবার প্রকাশের পরে ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে দৈনিক প্রকাশিত হতে থাকে। এটিই ভারতীয় ভাষায় প্রথম দৈনিক পত্রিকা। এই পত্রিকাতেই প্রথম সংবাদ-পরিবেশনের নিয়ম-কানুন লক্ষ করা যায়। এই পত্রিকাটিয়েই পরে কালজয়ী বাংলা উপন্যাস গুলো তৈরিতে বিস্তর ভূমিকা রেখে ছিল। বহু প্রথিতযশা সাহিত্যিকের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে এই পত্রিকার পাতায়—-যেমন রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, দীনবন্ধু মিত্র, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া এই পত্রিকায় ভারতচন্দ্র রায়, রামপ্রসাদ সেন, রামনিধি গুপ্তর মতো প্রখ্যাত প্রাচীন কবিদের, বহু কবিগান স্রষ্টা ও গায়কদের জীবনী প্রকাশ ও কাব্যের পর্যালোচনা করা হত। সংবাদ, সাহিত্য, রাজনীতি, শিক্ষা, সমাজ, ধর্ম বিষয়ে বহু মননশীল রচনা প্রকাশের পাশাপাশি রঙ্গব্যঙ্গমূলক রচনা প্রকাশ ও ‘কালেজীয় কবিতা যুদ্ধ’ আয়োজনের জন্যও পত্রিকাটি উল্লেখযোগ্য ও স্মরণীয় হয়ে আছে।

Join us on Telegram
বাংলার প্রথম দৈনিক ঈশ্বর গুপ্তের ‘সংবাদ প্রভাকর’
বাংলার প্রথম দৈনিক ঈশ্বর গুপ্তের ‘সংবাদ প্রভাকর’

বাংলা সাহিত্যে জ্ঞানান্বেষণ পত্রিকার ভূমিকা :-

১৮৩১ সালেই দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় ইয়ং বেঙ্গলের মুখপাত্র সাপ্তাহিক ‘জ্ঞানান্বেষণ‘ পত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয় এবং ১৮৩৩ সালের প্রথম থেকে এর একটি ইংরাজি সংস্করণ প্রকাশিত হতে থাকে। এই পত্রিকায় প্রকাশিত বহু যুক্তিনির্ভর, আধুনিক রচনা সমাজকে আলোড়িত করেছিল এবং প্রগতিবাদী চিন্তাধারাকে উৎসাহিত করেছিল। ১৮৩১ খ্রিঃ হিন্দু কলেজের খ্যাতনামা শিক্ষক রামচন্দ্র মিত্রের সম্পাদনায় জ্ঞানবিজ্ঞান বিষয়ক প্রথম বাংলা পত্রিকা ‘জ্ঞানোদয়‘ প্রকাশিত হয়। এখানে পুরাবৃত্ত, জীবনচরিত প্রকাশের পাশাপাশি প্রাণিবৃত্তান্ত ও বিজ্ঞান বিষয়ক নানা প্রবন্ধ প্রকাশিত হত। ১৮৩২ খ্রিঃ প্রকাশিত ‘বিজ্ঞান সেবধি’ পত্রিকাও বিজ্ঞান চর্চায় নিয়োজিত থেকেছে। ১৮৩৫ খ্রিঃ ‘সংবাদ পূর্ণচন্দ্রোদয়’ প্রকাশিত হলে বিদ্যাচর্চায় এক নতুন মাত্রা সংযোজিত হয়। ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে ‘জ্ঞানান্বেষণ’ পত্রিকার প্রকাশ বন্ধ হয়ে যাবার বছর তিনেক পরে ১৮৪৩ সালের ১৬ আগস্ট মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিচালনায় এবং অক্ষয়কুমার দত্তের সম্পাদনায় ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’ প্রকাশিত হয়।

বহু বিখ্যাত ব্যক্তি, যেমন- সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ক্ষিতিন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ বিভিন্ন সময়ে এই পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। তত্ত্ববোধিনী সভার এই মুখপত্রটিতে ধর্ম, সাহিত্য, বিজ্ঞান, দর্শন, ইতিহাস, ভূগোল, সমাজনীতি, রাজনীতি, পুরাতত্ত্ব প্রভৃতি বিচিত্র বিষয়ে চিন্তাশীল রচনা প্রকাশিত হত। দেশীয় জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি ইউরোপীয় সংস্কৃতির তথ্যবহুল পরিচয় প্রকাশ এই পত্রিকার উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল। এই পত্রিকাটি তার বিচিত্রস্বাদী রচনার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির রুচি, আগ্রহ, সৃষ্টিশীলতাকে এক অসামান্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিল। এই পত্রিকার লেখকগোষ্ঠীর মধ্যে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, অক্ষয়কুমার দত্ত, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজনারায়ণ, বসু-প্রমুখের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

বাংলা সাহিত্যে প্রথম সচিত্র মাসিক পত্রিকা ‘বিবিধার্থ সংগ্রহ’ :-

ঐতিহাসিক ও পুরাতত্ত্ববিদ্ রাজেন্দ্রলাল মিত্রের সম্পাদনায় ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে বিলিতি ‘পেনি ম্যাগাজিনে’র আদর্শে বাংলা ভাষার প্রথম সচিত্র মাসিক পত্রিকা ‘বিবিধার্থ সংগ্রহ’ প্রকাশিত হয়। প্রকাশের ক্ষেত্রে অনিয়মিত এই পত্রিকাটিতে পুরাবৃত্ত, মনীষীদের জীবনকথা, তীর্থক্ষেত্র-পরিচিতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, সাহিত্য সমালোচনা-সবেরই সন্ধান মিলত। নানান ধরনের চিত্রসমৃদ্ধ এই পত্রিকায় মধুসূদন দত্তের ‘তিলোত্তমাসম্ভব’ কাব্যের প্রথম সর্গ প্রকাশিত হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ছেলেবেলার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই পত্রিকার স্মৃতি ‘জীবনীস্মৃতি‘ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করে গেছেন। জ্ঞানচর্চার সঙ্গে শিল্পগত উৎকর্ষের যে সম্মিলন বিবিধার্থ সংগ্রহে শুরু হয়েছিল, পরবর্তীকালে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘বঙ্গদর্শন‘ (১৮৭২ খ্রিঃ) পত্রিকায় তারই উজ্জ্বললতর প্রকাশ লক্ষ করা যায়। এই দুই পত্রিকা প্রকাশের মধ্যবর্তী পর্যায়ে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণের সম্পাদনায় ‘সোমপ্রকাশ‘ নামক সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়।

বাংলা ভাষার প্রথম সচিত্র মাসিক পত্রিকা 'বিবিধার্থ সংগ্রহ'
বাংলা ভাষার প্রথম সচিত্র মাসিক পত্রিকা ‘বিবিধার্থ সংগ্রহ’

সমাজ সমস্যামূলক রচনার পাশাপাশি কৃষকদের সচেতন করার প্রচেষ্টা, নীলকরদের অত্যাচারের প্রতিবাদ, বিধবাবিবাহ, স্ত্রীশিক্ষা প্রসার—-প্রভৃতি বিষয়ে এই পত্রিকা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘বঙ্গদর্শন‘ পত্রিকাতেও বাঙালি মনীষার বিচ্ছুরণ ঘটেছে সমাজ-রাজনীতি-শিক্ষা-জ্ঞান-বিজ্ঞান-দর্শন বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ প্রবন্ধ রচনায়, বঙ্কিম লিখিত ব্যক্তিগত প্রবন্ধে ও সাহিত্য সমালোচনায়, ব্যঙ্গনির্ভর কৌতুক রচনায়। এই পত্রিকার লেখকদের মধ্যে চন্দ্রনাথ বসু, রাজকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়, রামদাস সেন, চন্দ্রশেখর মুখোপাধ্যায়ের নাম স্মরণীয়। বঙ্কিমচন্দ্রের পর কিছুকাল সঞ্জীবচন্দ্র, শ্রীশচন্দ্র এই পত্রিকার সম্পাদনা করলে নবপর্যায় বঙ্গদর্শনের সম্পাদনার ভার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গ্রহণ করেন। ১৩০৯-১৩১২ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত তাঁর সম্পাদনার কালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের তীব্রতা ও স্বদেশি আন্দোলনের উন্মাদনা সমাজকে আলোড়িত করেছিল। এই সাময়িক পত্রে সেই যুগলক্ষণের নির্ভরযোগ্য দলিল লিপিবদ্ধ রয়েছে।

বঙ্গদর্শন
বঙ্গদর্শন

দিগদর্শন‘ থেকে ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকা পর্যন্ত সাময়িকপত্রের ধারা পর্যালোচনায় দেখা যায় এ সময়ে মূলত সংবাদ পরিবেশন, তথ্য আহরণ ও তা বিতরণেই সাময়িক পত্রগুলি নিয়োজিত থেকেছে। সমাজ-রাজনীতি-ধর্ম-দর্শন-শিক্ষা সম্পর্কিত যুক্তিনিষ্ঠ ও নীতি-নির্ভর প্রবন্ধ-কবিতাই আলোচ্য কালপর্বে (১৮১৭-১৮৭২ খ্রিস্টাব্দ) রচিত হয়েছে। গদ্য ক্রমশ তার কাঠিন্য ও নীরসতা বর্জন করে সরস ও সর্বজনবোধ্য হয়ে উঠেছে।

বাংলা সাহিত্যে ভারতী পত্রিকার ভূমিকা :-

১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে মূলত ঠাকুরবাড়ির সদস্যদের আত্ম প্রকাশের মাধ্যমরূপে গড়ে ওঠে ‘ভারতী‘ পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই পত্রিকায় জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিপুল অবদান ছিল। সম্পাদকদের মধ্যে ছিলেন স্বর্ণকুমারী দেবী, হিরণ্ময়ী দেবী, সরলা দেবী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়, সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। স্বদেশীয় ভাষার আলোচনা, জ্ঞানচর্চা, ভাবস্ফূর্তি-এ সবই ছিল এই পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্য। এই পত্রিকায় প্রকাশিত ছোটোগল্প, প্রবন্ধ, কবিতা, রসরচনা, গ্রন্থসমালোচনা, সংবাদ প্রভৃতি বাংলা গদ্যরীতির বিবর্তনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল।


লেখক- প্রিয়ব্রত পাত্র

[email protected]


আপনিও লেখা পাঠান নিম্নলিখিত ইমেল মারফৎ

[email protected]

Students Care

স্টুডেন্টস কেয়ারে সকলকে স্বাগতম! বাংলা ভাষায় জ্ঞান চর্চার সমস্ত খবরা-খবরের একটি অনলাইন পোর্টাল "স্টুডেন্ট কেয়ার"। পশ্চিমবঙ্গের সকল বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের এবং সমস্ত চাকুরী প্রার্থীদের জন্য, এছাড়াও সকল জ্ঞান পিপাসু জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিবর্গদের সুবিধার্থে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: স্টুডেন্টস কেয়ার কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত !!