মনোঃসংযোগ ধরে রাখার ১০ টি উপায় আপনার জীবন বদলে দিতে পারে
মনোঃসংযোগ ধরে রাখার ১০ টি উপায়
কমবেশি সব বয়সের মানুষের যে সমস্যা হয়ে থাকে আমরা কোন কাজ শুরু তো করি কিন্তু আমাদের তাতে মনোযোগ থাকেনা বা কিছুসময় পার করার পর আমরা আর মনোযোগ ধরে রাখতে পারি না। অর্থাৎ আমরা প্রতিদিন বিক্ষিপ্তভাবে নানা কাজ করি। আর এ কাজগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী সুবিন্যস্তভাবে করা হয় না। যার ফলে শুধু কর্মদক্ষতাই কমে যায় না, এর সাথে কাজের মান, কাজ করার ইচ্ছা আর আগ্রহ ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এক্ষেত্রে সঠিকভাবে মনোঃসংযোগ করতে পারলে তা দিনের কার্যক্রম ঠিকভাবে করতে সহায়ক হবে। আজকের প্রতিবেদনে মনোঃসংযোগ ধরে রাখার ১০ টি উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো-
১. নিয়মিত ধ্যান করুণঃ
![নিয়মিত ধ্যান করুণ](https://www.studentscaring.com/wp-content/uploads/2018/08/luciea-rene-701x499.jpg)
মস্তিস্ককে সজাগ রাখতে মস্তিষ্কের কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য ধ্যান হতে পারে একটি দারুণ উপায়। এর আপনার একটি ভালো সময় বেছে নিতে হবে, যে সময়ে আপনি সচেতন ও জেগে থাকবেন। সকালে উঠে ১০-২০ মিনিট শান্ত হয়ে বসে, সব চিন্তা ঝেড়ে ফেলে, নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর মনোযোগ দিয়ে আপনি তা করতে পারেন।
২. ব্যায়াম করুনঃ
![ব্যায়াম করুন](https://www.studentscaring.com/wp-content/uploads/2018/08/exercise-701x732.jpg)
নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম আপনার মনোযোগ এবং ফোকাস কে অনেক বেশী উন্নত করতে পারে কোনো একটি বিষয়ে মনোযোগী হওয়ার ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য শারীরিক অনুশীলনের গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শারীরিক অনুশীলন মস্তিষ্কের উন্নতি করে এবং মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়তা করে। যাদের অ্যাটেনশন ডেফিসিয়েন্সি রোগ রয়েছে তারাও নিয়মিত সময় করে ব্যায়াম করতে পারেন ভালো ফল পাবেন।
৩. একসঙ্গে একাধিক কাজ করবেন নাঃ
![একসঙ্গে একাধিক কাজ করবেন না](https://www.studentscaring.com/wp-content/uploads/2018/08/main-qimg-87c400e3023a8431d8beb23ac12544b8-c.jpg)
মনে রাখতে হবে আমরা মানুষ, কম্পিউটার না। মাল্টি টাস্ক বা এক সময়ে একাধিক কাজ একটি কম্পিউটারের জন্য যতটা সহজ আপনার আমার জন্য তা কিন্তু না। এতে আপনার উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দেয়। ডানা ফাউন্ডেশনের বই ‘ব্রেইন ফিটনেস’-এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, মাল্টিটাস্কিং তথ্য-প্রক্রিয়াজাত করার ক্ষেত্রে ‘বটলনেক’ তৈরি করে। এতে বাস্তবে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায়। মনোযোগ বাড়ানোর জন্য এক সময়ে একটি কাজই করুন বাকি সকল কাজের বিষয় চিন্তামুক্ত হয়ে কাজ করুণ।
৪. অধিক পরিমাণ তরল পাল করুনঃ
![অধিক পরিমাণ তরল পাল করুনঃ](https://www.studentscaring.com/wp-content/uploads/2018/08/2-3.jpg)
২০১২ সালের জার্নাল অব নিউট্রিশনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে হালকা ডিহাইড্রেশন– যা এতোই সামান্য যে আপনি হয়ত বুঝবেনই না যে আপনি তৃষ্ণার্ত এবং এটি আপনাকে অমনোযোগী করে তুলতে পারে। সারাদিনে বেশী পরিমাণ তরল পান করার চেষ্টা করুণ। আপনি চা পান করএ পারেন। ব্ল্যাক টি’র ভেতর এল-থায়ানিন নামক এক অ্যামাইনো এসিড থাকে যেটি আপনার মস্তিষ্কে মনোযোগ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
৫. কি কি করতে হবে তা ভাগ করে কর্মতালিকা করুনঃ
![কর্মতালিকা করুন](https://www.studentscaring.com/wp-content/uploads/2018/08/কর্মতালিকা-করুন.jpg)
প্রচুর কাজের চাপ রয়েছে এই ভেবে যদি কাজ শুরু করেন তাহলে কখনোই আপনার নিজের কাজের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি করবে না বরং তা আপনার কাজের প্রতি অনেক বেশী অনিহা তৈরী করবে। তাই সকলন।কাজ গুলিকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে সময় ধরে একটি তালিকা বানিয়ে ফেলুন। এবং ওই তালিকা অনুসারে সময়ের মধ্যে কাজ গুলিকে সম্পন্ন করার চেষ্টা করুণ দেখবেন কাজের প্রতি অনেক বেশী মনোযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৬. কাজের মাঝে একটু বিরতি নিনঃ
![বিরতি নিন](https://www.studentscaring.com/wp-content/uploads/2018/08/বিরতি-নিন.jpg)
কাজে মনোযোগ ধরে রাখার অন্য একটি উপায় হলো কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নেয়া। একটানা কাজ করতে থাকলে তা কোনো কাজই সফলভাবে শেষ করতে নিরুৎসাহিত করে। টানা ২ ঘন্টা কাজ করার থেকে মাঝে ১৫ মিনিটের ব্রেক নিয়ে নিন। কাজে মন লাগবে।
৭. পরিমিত ঘুমান
![পরিমিত ঘুমান](https://www.studentscaring.com/wp-content/uploads/2018/08/পরিমিত-ঘুমা.jpg)
সময় মেনে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। চেষ্টা করুণ ঘুমানোর ও ঘুম থেকে ওঠার একটি নির্দিষ্ট স্ময় করার। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস আপনার শরীর এবং মনকে সতেজ রাখার পাশাপাশি মনোযোগী হবার শক্তি দেবে।
৮. সামাজিক গণমাধ্যম থেকে নিজেকে দূরে রাখুনঃ
![সামাজিক গণমাধ্যম](https://www.studentscaring.com/wp-content/uploads/2018/08/সামাজিক-গণমাধ্যম.png)
কাজ করার সময় বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যম যেমনঃ ফেসবুক, ভাইবার, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম ইত্যাদি থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। কাজের মাঝে কোন নোটিফিকেশন চেক করা বাকি রয়ে গে্লো কিনা বা মেসেঞ্জারের ডাক এলো, তখন কে মেসেজ করলো তা যদি কাজ করার সময় মনে করেন তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই তা আপনার মনোযোগ কমিয়ে দিবে। তো চেষ্টা করবেন কাজের সময় সামাজিক গণমাধ্যম যেনো সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে পারেন।
৯. দূরের জিনিসে দৃষ্টি নিবদ্ধ করুনঃ
যারা অধিকাংশ সময় কম্পিউটার স্ক্রিন, মনিটর, স্মার্টফোন কিংবা ট্যাবের দিকে তাকিয়ে ব্যয় করেন তারা এই প্রথা অবলম্বন করুণ। নেকি দিকে তাকিয়ে সারাক্ষন কাজ করলে আমাদের মন আগের তুলনায় অনেক বিক্ষিপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এ সমস্যা কাটাতে কিছুক্ষণের জন্য হলেও কিছুটা দূরের কোনো বস্তুর দিকে তাকিয়ে মনোযোগী হন।
১০. ভাল শ্রোতা হোন
![ভাল শ্রোতা](https://www.studentscaring.com/wp-content/uploads/2018/08/ভাল-শ্রোতা.jpg)
আপনি আসলেই আপনার মনোযোগকে স্থির করতে সক্ষম হয়েছেন? এর উত্তর পাওয়ার জন্য একটি পরীক্ষা করুণ। যখন কেউ কিছু বলতে বলতে থেমে গিয়ে সে কী বলছিলো প্রশ্ন করার পর আপনি সঠিক উত্তর দিতে পারবেন তখনই বুঝবেন আপনি আসলেই আপনার মনোযোগকে স্থির করতে সক্ষম হয়েছেন। এইজন্য শ্রবণশক্তিকে সমৃদ্ধ করুন। ভালো শ্রোতা হোন।
মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় গেইম খেলুন, বড় লেখাগুলো ধীরে ধীরে পড়ুন, ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগান, কাজের শুরুটা ধীরে ধীরে করুন, চুইংগাম চিবান, গান শুনুন, নিজেকে প্রশ্ন করুণ প্রভৃতি
—- সমাপ্ত —-
Tag- মনোঃসংযোগ ধরে রাখার ১০ টি উপায় , মনোযোগ ধরে রাখার অনুশীলন, মনোঃসংযোগ ধরে রাখার জন্য কি কি করনীয়