কিভাবে সম্ভব হল মহাকাশে শাকসবজি চাষ || জানুন সেই ইতিহাস
মহাকাশে শাকসবজি চাষ
এযাবৎ বিশ্বের কিছু বিখ্যাত আবিষ্কারের মধ্যে স্থান করে নেবে মহাকাশে শাকসবজি চাষ । হ্যাঁ আপনি ঠিকি পড়েছেন, আমরা মনুষ্যজাতি সফলতার সাথে মহাকাশে মাইক্রোগ্যাভিটিতে শাকসবজি চাষ করতে সমর্থ হয়েছি কয়েক বছর আগেই। আজ জেনে নেবো সেই আবিষ্কারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
মহাকাশচারীরা এতদিন পেটপুজো করতেন বাসী খাবার দিয়ে। যেগুলি সরবরাহ করা হতো পৃথিবী থেকে। কিন্তু তাদের খাবার টেবিলে যোগ হয়েছে মুখোরোচক টাটকা খাবার। যে খাবার পৃথিবী থেকে পাঠানো নয়। এসব খাবার মহাকাশেই উৎপাদন করা হচ্ছে। বিশেষ করে টাটকা শাক-সবজি।
♦ সূচনা-
সালটা ২০০২। তখন থেকেই গবেষণা চালানো হয়েছিল, মহাকাশেই টাটকা সবজি চাষ করার উপায় আবিষ্কার করার জন্য। সেই উপলক্ষে নভোযান স্পেসএক্স-৩ এর মাধ্যমে পৃথিবী থেকে শাক-সবজির চারা পাঠানো হয়েছিল আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে। অবশেষে ২০১৪ সালে এই আবিষ্কার শতভাগ সাফল্য লাভ করে। যার ফলে বর্তমানে মহাকাশের টাটকা শাকসবজি চাষ করা হয়!
♦ কিভাবে সম্ভব হল মহাকাশে শাকসবজি চাষ করা হয়?
মহাকাশে স্পেসশিপের মধ্যেই মাইক্রোগ্যাভিটিতে সফল ভাবে শাকসবজি চাষ করা সম্ভব হয়েছে। বিশেষভাবে তৈরি ‘পিলো’ নামে একটি বাক্সে একটি ছোট আকারের গ্রিণ হাউজ এর মধ্যে চাষ করা হয়। এই গ্রিণ হাউসটির নাম ‘লাডা’। এই গ্রিণ হাউজটিতে ২০০২ সাল থেকে চাষবাস করার জন্য গবেষণা করা হয়ে আসছিল, অবশেষে ২০১৪ সালে বৈজ্ঞানিকরা সাফল্য লাভ করেন।
♦ মহাকাশে শাকসবজি চাষের জন্য কোন্ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়?
মহাকাশচারীরা স্পেসস্টেশনে সবজি চাষের জন্য নতুন ধরণের একটি পদ্ধতি অবলম্বন করেন। এটাকে বলা হয় ‘ভেজ্জি’। মাধ্যাকর্ষণশূন্য ‘পিলোতে’ (আগে উল্লেখ করা হয়েছে) থাকে সাদা আলোর ব্যবস্থা। আরও থাকে লাল, নীল ও সবুজ আলো, যা উদ্ভিদের জন্য প্রয়োজনীয় ও ভারসাম্যপূর্ণ আলোর ব্যবস্থা করে। এ ছাড়া থাকে পরিমিত কার্বন-ডাই অক্সাইডেরও সুবন্দোবস্ত। মহাকাশে এই আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল বিভিন্ন রঙের LED।
সেই সময় লাল আর নীল LED ব্যবহার করা হয়েছিল যেন তারা তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে বিচ্ছুরিত করতে পারে। এটি উদ্ভিদের বৃদ্ধি সাধনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। সবুজ LED সেগুলোকে খাওয়ার জন্য আরো উপযোগী করে তুলতে ব্যবহৃত হয়েছিল।
সহজে বোঝার জন্য নিচের ভিডিওটি দেখে নিতে পারেন-
♦ মহাকাশে সর্বপ্রথম কোন্ শাক উৎপাদিত হয়?
ভেজ্জি পদ্ধতিতে মহাকাশচারীরা লাল রঙের লেটুস পাতা ফলাতে সক্ষম হয়েছেন। ওগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য পৃথিবীতে পাঠানো হয়। ওই সব সবজি পরীক্ষাগারে গবেষণা শেষে নাসার মতানুসারে ওগুলো খাওয়ার উপযোগী।
নাসা জানিয়েছে, পৃথিবী থেকে পাঠানো প্যাকেটজাত খাবার দুই থেকে তিন বছর ভালো থাকে। এদিকে নভোচারীদের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য চাই টাটকা খাওয়ার। ফলে এসব সবজি বেশ কাজে দেবে বলে নাসা ধারণা করছে। বিশেষ করে টাটকা সবজি এবং ফল তাদের শারীরিক ও মানসিক শক্তি যোগাবে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি বিষয় ধারনা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে একদিন মঙ্গলের দীর্ঘ অভিযানের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি পুষ্টিকর ও দীর্ঘস্থায়ী খাদ্যের উৎস তৈরি করা যাবে।
তথ্য গুলি ভালো লেগে থাকলে সকলের সাথে শেয়ার করে নেবেন। এবং আমাদের সাথে প্রতিনিয়ত যুক্ত থাকবেন। আবারও ফিরে আসবো নতুন কোনো লেখ্ নিয়ে। ততক্ষণ বিদায় জানালাম। ভালো থাকুন, ভালো রাখুন। ধন্যবাদ।