সৌখীর মায়ের চরিত্রের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করো | ডাকাতের মা
একাদশ শ্রেণী, বাংলা, অধ্যায়- ডাকাতের মা
— সংকলনে- ইমরান সরদার
উত্তর:- বিশ শতকের অন্যতম কথা সাহিত্যিক সতীনাথ ভাদুড়ির ‘চকাচকী‘ গল্প গ্রন্থের অন্তগর্ত “ডাকাতের মা” একটি উল্লেখযোগ্য ছোটো গল্প। তার এই গল্পে একটি ডাকাত পরিবারের কাহিনী যোগ্যতার সঙ্গে বর্ণিত হয়েছে।
“ডাকাতের মা” গল্পে মুখ্য নারী চরিত্র টিকে কোনো ব্যাক্তি নামে চিহ্নিত করা হয়নি। তাকে তার মাতৃত্বের সম্পর্ক সূত্র চিহ্নিত করা হয়ছে। তাকে তার মাতৃত্বের সম্পর্ক সূত্রে চিহ্নিত অর্থাৎ ‘ডাকাতের মা’। সৌখীর মায়ের চরিত্রের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য এখানে ধরা পড়েছে। তা নিম্নে আলোচনা করা হল:-
✴️আত্মমর্যাদা বোধ:- ‘ডাকাতের মা’ গল্পে সে ডাকাতের বউ এবং ডাকাতের মা হিসেবে গর্বিত। এক্ষেত্রে সৌখির মায়ের আত্মমর্যাদাবোধের পরিচয় মেলে।
✴️সনেহ-মমতা:- ডাকাতের মা গল্পের ডাকাতের মায়ের পুত্রবধূ এবং নাতির প্রতি প্রবল স্নেহ-মমতার পরিচয় ফুটে উঠেছে। বউকে আবার রুপোর গয়না মুড়ে দেওয়ার স্বপ্নে সে বিভোর। তার পুত্রবধুর দুর্বল চেহারা হওয়ায় তার উপযুক্ত পরিচর্যার জন্য সে বাধ্য হয়ে বৌমা ও নাতি কে তার বেয়াই বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
✴️শরমশীলতা:- সৌখীর মা অত্যান্ত পরিশ্রমী মহিলা ছিলেন। তাই সৌখী জেলে যাওয়ার দু’বছর পর থেকে তার অনুচররা টাকা দেয়া বন্ধ করে দিলে, সে বাড়ি বাড়ি খই মুড়ি বিক্রি করে নিজের পেট চালিয়েছে।
✴️ছেলের প্রতি ভালোবাসা:- এই গল্পে তার সন্তানের প্রতি গভীর ভালবাসার পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। ছেলে জেল থেকে কখন ফিরবে সে কথা ভেবে পাঁচ বছরে এক দিনও নাক-মুখ ঢেকে শোয়নি এবং সৌখী জেল থেকে ফিরতে তাকে কি খেতে দেবে তা ভেবে একটি লোটা চুরি করে।
✴️পরুষতন্ত্রের আস্থা:- নিরক্ষর সৌখীর মা পুরুষের অধিপত্য কে শিরোধার্য করে নিয়েছিল। তাই সে বলে “বাপের বেটা, তাই মেজাজ অমন কড়া” তাই পুত্রের শাসন তাকে বিচলিত করেনি।
✴️বাস্তব বুদ্ধি:- সৌখীর মায়ের যথেষ্ট বাস্তব বুদ্ধির পরিচয় পাওয়া যায়। ছেলে দীর্ঘদিন পর জেল থেকে বাড়ি ফিরলে, সেই মুহূর্তে তার ছেলেকে তার ডাকাতি স্বার্থপরতা ও তার স্ত্রী-পুত্রের কথা জানায় নি।
✴️আদর্শ মাতৃমূর্তি:- বলা যায় সবকিছুর ঊর্ধ্বে সে একজন আদর্শ মাতৃ স্বরূপা। সন্তানের জন্য উদ্বেগ মমতা গর্ব বোধ মিলিয়েছে মাতৃত্বে অন্যান্য।