স্বামী বিবেকানন্দের জীবনী ও বাণী || স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম দিবস
স্বামী বিবেকানন্দের জীবনী ও বাণী
কোটি-সূর্যের আলোর ন্যায় ভাস্বর যে মুক্তপুরুষ সমগ্র জগতের মধ্যে হিন্দুধর্মের মহিমা প্রচার করেছিলেন, তিনিই স্বামী বিবেকানন্দ। একমাত্র স্বামী বিবেকানন্দই সহজ ও সুন্দর উপায়ে বেদান্তের ফলিত রূপের প্রচার ও প্রসার ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দের জীবনী ও বাণী পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায় যে, তৎকালীন সন্ন্যাসীদের মধ্যে তিনি কতটা যুগোপযুগী ছিলেন। নিম্নে স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম-পরিচয়, শিক্ষা, গুরু, সাধনা ও লোকশিক্ষা সম্পর্কে সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করা হল।
স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জানুয়ারী কলিকাতার শিমুলিয়া অঞ্চলে এক সম্ভ্রান্ত কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দত্ত কুলোদ্ভব বিবেকানন্দের পিতার নাম বিশ্বনাথ দত্ত এবং মাতার নাম ভুবনেশ্বরী দেবী। ছেলেবেলায় তার নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। বাল্যেই স্বামী বিবেকানন্দের মধ্যে আধ্যাত্মিকতার স্ফুরণ ঘটে। ছেলেবেলায় তিনি শিব, রাম, সীতা ও হনুমানের মূর্তির সামনে ধ্যানে বসতেন। তিনি ধর্মশাস্ত্র, সঙ্গীত, সাহিত্য ও শিল্পকলায় বিশেষ পাণ্ডিত্ব অর্জন করেছিলেন। স্বামী বিবেকান্দ ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
প্রথম জীবনে স্বামী বিবেকানন্দ চরম যুক্তিবাদী থাকলেও শ্রীরামকৃষ্ণের সহচার্যে এসে তাঁর মধ্যে আধ্যাত্মিকতার নতুন অধ্যায় সূচিত হয়। ১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দে বিবেকানন্দ প্রতিবেশী সুরেন্দ্রনাথ মিত্রের বাড়িতে প্রথম শ্রীরামকৃষ্ণদেবের সাক্ষাৎ পান এবং তখন তিনি তাঁকে গেয়ে শোনান সেই বিখ্যাত গান-মন চল নিজ নিকেতনে। ঈশ্বরের দর্শন লাভ সম্ভব কিনা-এই প্রশ্নের উত্তর খুজে বেড়াতেন যুক্তিবাদী নরেন্দ্রনাথ। কিন্তু ঋষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ অনেকের নিকট ঐ প্রশ্নের সদোত্তর না পেয়ে তিনি চলে যান শ্রীরামকৃষ্ণদেবের নিকট। তাঁকেও করলেন ঐ সহজ প্রশ্ন-আপনি কি ঈশ্বর দেখেছেন? শ্রীরামকৃষ্ণও সহজ ভাষায় উত্তর দিলেন- ‘‘হ্যা, আমি তোমাকে যেমন আমার সামনে দেখছি তাঁকেও ঠিক সে রকম দেখি’’। উত্তন শুনে বিবেকানন্দের এত বৎসরের সঞ্চিত জ্ঞান-ক্ষুধা নিবৃত্ত হয়। কিছুকাল পরে স্বামী বিবেকানন্দ একবার দক্ষিণেশ্বরে গেলে শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁকে পাশে বসিয়ে দক্ষিণ চরণ তাঁর দেহে স্পর্শ করেন। তখন তাঁর মধ্যে যেন বিদ্যুৎ তরঙ্গ প্রবাহিত হতে থাকে। নরেন্দ্রনাথ উপলব্ধি করলেন যেন বিশ্বব্রহ্মার সব কিছু তাঁর মধ্যে লয়প্রাপ্ত হচ্ছে যেমনটি অর্জুনের হয়েছিল কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের প্রাক্কালে শ্রীকৃষ্ণ কর্তৃক বিশ্বরূপ দর্শনের পর। পিতার মৃত্যুর পর নরেন্দ্রনাথের সাংসারিক দুঃখ বৃদ্ধি পায় এবং সেই সাথে তাঁর আধ্যাত্মিকতাও বৃদ্ধি পায়। সংসারের কোন কিছুই তাঁকে সাধনার পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। সংসারের নানা অভাব-অনটনের মধ্যেও চলতে থাকে তাঁর আধ্যাত্ম-সাধনা। গুরুর কৃপায় কাশীপুরে স্বামী বিবেকানন্দ নির্বিকল্প সমাধী লাভ করেন। তারপর তিনি শ্রীরামকৃষ্ণদেবের নিকট গৈরিক বস্ত্র ও সন্ন্যাস লাভ করেন। শ্রীরামকৃষ্ণদেবের দেহত্যাগের পর তিনিই ভক্তদের মধ্যমণি হয়ে উঠেন। ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে ভক্তরা চাঁদা তুলে অর্থ সংগ্রহ করে স্বামী বিবেকানন্দকে অ্যামেরিকায় পাঠান শিকাগো বিশ্বধর্ম-মহাসম্মেলনে অংশ নিতে। তিনি ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই সেপ্টেম্বর শিকাগোর আর্ট ইনস্টিটিউট হলে অনুষ্ঠিত বিশ্বধর্ম-মহাসম্মেলনে হিন্দুদের প্রতিনিধিত্ব করেন। স্বামী বিবেকানন্দ বক্তৃতার শুরুতেই ‘‘আমার প্রিয় অ্যামেরিকার ভ্রাতা ও ভগিনীগণ’’ বলে সম্বোধন করলে উপস্থিত জনতার করতালী ও হর্ষধ্বনীতে মুখরিত হয়ে উঠে সভাস্থল। বৃটিশ শাসনামলে হিন্দুধর্ম সম্পর্কে বিশ্ববাসীর অস্পষ্ট ও নেতিবাচক ধারণা ছিল। তাছাড়া ঐ ধর্ম-মহাসম্মেলনের উদ্দেশ্যই ছিল বিভিন্ন ধর্মের তুলনামূলক আলোচনা করে খ্রীস্টধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করা। স্বামীজীর বক্তৃতার পর তা আর সম্ভব হয়নি বরং হিন্দুধর্মেরই জয়ধ্বনি হয়েছে। তিনি উক্ত ধর্ম-মহাসম্মেলনে বক্তৃতা ছাড়াও অ্যামেরিকার ও ইংল্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে বক্তৃতা দিয়ে বিশ্ববাসীর নিকট হিন্দুধর্মের মহিমা প্রচার করেছিলেন। তিনি বেদান্ত চর্চা ও প্রচারের জন্য ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে নিউইয়র্কে বেদান্ত সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। মিসেস ওলিবুল, জোসেফিন ম্যাকলিয়োড, ম্যাডাম মেরী লুই, মিস ডেট্রয়েটেড ক্রিস্টিনা। ড. লিয়োন ল্যান্ডস্-বার্গ, উইলিয়াম জেমস, জোসাই রয়েস, রবার্ট ডি ইঙ্গারসোল, নিকোলা টেসলা, লর্ড কেলভিন, হ্যারিয়েট মনরো, এলা হুইলার উইলকক্স, মি. ওয়াল্ডো গুডউইল, মি. লিগেট, মেরী ফিলিপ, মিসেস আর্থার, মিসেস গুডইয়ার, সারাহ বার্নহার্ডট, এমা কেলডি, হারম্যান লুডউইক, মি. স্ট্যাডি, সোভিয়ার দম্পত্তি প্রমুখ অ্যামেরিকা ও ইংল্যান্ডের ব্যক্তিবর্গ স্বামী বিবেকানন্দের প্রতি অনুরক্ত হয়ে তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। বিদেশী শিষ্যদের মধ্যে আয়ারল্যান্ডের মিস মার্গারেট নোবেল (ভগিনী নিবেদিতা) স্বামী বিবেকানন্দের খুব প্রিয়ভাজন ছিলেন যিনি ভারতবর্ষে এসে আধ্যত্ম-সাধনা ও জীবসেবায় আত্মনিয়োগ করেন। স্বামীজী শুধু বেদান্ত প্রচারই নয়, বেদান্ত-দর্শনের ব্যবহারিক প্রয়োগ করতেও সক্ষম হয়েছিলেন। তবে তিনি বেদান্তবাদী হলেও মা কালীর প্রতি তাঁর অচলা ভক্তি অটুট ছিল। তিনি ভক্তদের বোঝাতেন, শুধু আচার-অনুষ্ঠানের দ্বারাই নয় জীবসেবার দ্বারাও ঈশ্বরকে লাভ করা যায়। সর্বজীবেই ঈশ্বর বিরাজ করেন বলে জীবকে সেবা করলে ঈশ্বরকেই সেবা করা হয়। তাইতো তিনি সমগ্র ভারতবর্ষে ছড়িয়ে দিয়েছেন সে অমর বাণী-‘‘বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুজিছ ঈশ্বর, জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজী সুবাস চন্দ্র বসু, ঋষি অরবিন্দ ঘোষ, বাল গঙ্গাধর তিলক, স্যার জগদীশচন্দ্র বসু, রোম্যারোলা প্রমুখ মনীশীগণ স্বামী বিবেকানন্দ কর্তৃক প্রভাবান্বিত হয়েছিলেন। তিনি জীবসেবা ও ধর্মচর্চার নিমিত্ত ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের পহেলা মে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন প্রতিষ্ঠা করেন যা পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায় স্থাপিত বেলুড় মঠ কর্তৃক পরিচালিত হয়। স্বামীজী সংক্ষিপ্ত জীবনের বৃহৎ কর্মযজ্ঞ শেষে ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা জুলাই মহাসমাধীযোগে ইহলীলা সংবরণ করেন।
♦ স্বামী বিবেকানন্দের বাণী
১. “যখন আপনি ব্যস্ত থাকেন তখন সব কিছুই সহজ বলে মনে হয় কিন্তু অলস হলে কোনো কিছুই সহজ বলে মনে হয়না” – Swami Vivekananda
২. “নিজের জীবনে ঝুঁকি নিন, যদি আপনি জেতেন তাহলে নেতৃত্ব করবেন আর যদি হারেন তাহলে আপনি অন্যদের সঠিক পথ দেখাতে পারবেন” – Swami Vivekananda
৩.“কখনো না বলোনা, কখনো বলোনা আমি করতে পারবোনা | তুমি অনন্ত এবং সব শক্তি তোমার ভিতরে আছে, তুমি সব কিছুই করতে পারো” – Swami Vivekananda
৪.“যা কিছু আপনাকে শারীরিক, বৌদ্ধিক এবং আধ্যাত্মিকভাবে দুর্বল করে তোলে সেটাকে বিষ ভেবে প্রত্যাখ্যান করুন” – Swami Vivekananda
৫. “দুনিয়া আপনার সম্বন্ধে কি ভাবছে সেটা তাদের ভাবতে দিন | আপনি আপনার লক্ষ্যগুলিতে দৃঢ় থাকুন, দুনিয়া আপনার একদিন পায়ের সম্মুখে হবে” – Swami Vivekananda
৬.“কখনও বড় পরিকল্পনার হিসাব করবেন না, ধীরে ধীরে আগে শুরু করুন, আপনার ভূমি নির্মাণ করুন তারপর ধীরে ধীরে এটিকে প্রসার করুন” – Swami Vivekananda
৭.“ইচ্ছা, অজ্ঞতা এবং বৈষম্য – এই তিনটিই হলো বন্ধনের ত্রিমূর্তি” – Swami Vivekananda
৮.“মানুষের সেবাই হলো ভগবানের সেবা” – Swami Vivekananda
৯. “মহাবিশ্বের সীমাহীন পুস্তকালয় আপনার মনের ভীতর অবস্থিত” – Swami Vivekananda
১০.“ওঠো এবং ততক্ষণ অবধি থেমো না, যতক্ষণ না তুমি সফল হচ্ছ” – Swami Vivekananda
১১.“যতক্ষণ না আপনি নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখবেন, ততক্ষন আপনি ঈশ্বরকে বিশ্বাস করবেন না” – Swami Vivekananda
১২. “মনের শক্তি সূর্যের কিরণের মত, যখন এটি এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত হয় তখনই এটি চকচক করে ওঠে” – Swami Vivekananda
১৩. “যেই রকম আপনি ভাববেন ঠিক সেইরকমই আপনি হয়ে যাবেন | যদি আপনি নিজেকে দুর্বল হিসাবে বিবেচনা করেন তাহলে আপনি দুর্বল হয়ে যাবেন আর আপনি যদি নিজেকে শক্তিশালী মনে করেন, তাহলে আপনি শক্তিশালী হয়ে উঠবেন” – Swami Vivekananda
১৪. “শক্তিই জীবন, দুর্বলতাই মৃত্যু, বিস্তার জীবন, সংকোচন মৃত্যু, প্রেম জীবন, ঘৃণা মৃত্যু” – Swami Vivekananda
১৫. “প্রত্যেকটি ধারণা যা আপনাকে দৃঢ় করে সেটাকে আপন করে নেওয়া উচিত এবং প্রত্যেকটি ধারণা যা আপনাকে দুর্বল করে দেয়, তা প্রত্যাখ্যান করা উচিত” – Swami Vivekananda
১৬. “সব শক্তিই আপনার মধ্যে আছে সেটার উপর বিশ্বাস রাখুন, এটা বিশ্বাস করবেন না যে আপনি দুর্বল | দাঁড়ান এবং আপনার মধ্যেকার দৈবত্বকে চিনতে শিখুন” – Swami Vivekananda
১৭. “অন্য কারোর জন্য অপেক্ষা করো না, তুমি যা করতে পারো সেটা করো কিন্তু অন্যের উপর আশা করো না” – Swami Vivekananda
১৮. “সমাজ অপরাধীদের কারণে খারাপ হয়না বরং ভালো মানুষদের নীরবতার কারণে হয়” – Swami Vivekananda
১৯. “তারা একাই থাকেন, যারা অন্যদের জন্য জীবিত থাকেন” – Swami Vivekananda
২০. “একটি সময়ে একটিই কাজ করো এবং সেটা করার সময় নিজের সবকিছুই তার মধ্যে ব্যয় করে দেও” – Swami Vivekananda
২১. “নিজেকে দুর্বল মনে করা সবথেকে বড় পাপ” – Swami Vivekananda
২২. “সত্যকে হাজার আলাদা আলাদা উপায়ে বলা যেতে পারে, তারপরেও সব কিছু সত্যই থাকে” – Swami Vivekananda
২৩. “একটি রাষ্ট্রের অগ্রগতি জানার সবচেয়ে ভাল উপায় হল সেই রাষ্ট্রে নারীর অবস্থান” – Swami Vivekananda
২৪. “মহাবিশ্বের সমস্ত শক্তি প্রথম থেকেই আমাদের। তারা হল আমরাই যারা নিজের চোখের উপর প্রথমে হাত রাখি এবং তারপর কান্নাকাটি করি, কত অন্ধকার আছে বলে” – Swami Vivekananda
২৫. “যেমন ভাবে বিভিন্ন উৎস থেকে উৎপন্ন স্রোতগুলি তাদের জল সমুদ্রে মিলিত করে, তেমন প্রকারই মানুষ দ্বারা নির্বাচিত প্রত্যেক পথ সেটা ভালোই হোক বা খারাপ, ভগবানের কাছে নিয়ে যায়” – Swami Vivekananda
২৬. “কারোর নিন্দা করবেন না: যদি আপনি সাহায্যের জন্য আপনার হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন, তাহলে নিশ্চই তা বাড়ান | আর যদি না বাড়াতে পারেন, তাহলে আপনার হাত জোর করুন আর আপনার ভাইদের আশীর্বাদ করুন এবং তাদেরকে তাদের পথে যেতে দিন” – Swami Vivekananda
২৭. “বিশ্ব একটি ব্যায়ামাগার যেখানে আমরা নিজেদেরকে শক্তিশালী করতে এসেছি” – Swami Vivekananda
২৮. “যত বেশি আমরা বাইরে গিয়ে অন্যদের ভালো করবো, আমাদের হৃদয় ততই বিশুদ্ধ হবে এবং ভগবান সেখানে বাস করবেন” – Swami Vivekananda
২৯. “বাহ্যিক স্বভাব কেবল অভ্যন্তরীণ স্বভাবের একটি বড় রূপ হয়” – Swami Vivekananda
৩০. “যখন কোনো বিচার অন্যভাবে মনকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলে, তখন সেটা বাস্তবিক, শারীরিক বা মানসিক অবস্থায় পরিবর্তিত হয়ে যায়” – Swami Vivekananda
৩১. “গীতা পড়ার পরিবর্তে আপনি ফুটবলের মাধ্যমে স্বর্গের আরো কাছাকাছি চলে যেতে পারবেন” – Swami Vivekananda
৩২. “যদি কোনদিন, আপনার সামান্য কোনো সমস্যা না আসে, আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে আপনি ভুল পথে হাটছেন” – Swami Vivekananda
৩৩. “সবচেয়ে বড় ধর্ম হল নিজের স্বভাবের প্রতি সত্য থাকা, নিজের প্রতি বিশ্বাস করুন” – Swami Vivekananda
৩৪.“আর কিছুরই দরকার নেই | দরকার শুধু প্রেম, ভালোবাসা ও সহিষ্ণুতা | জীবনের অর্থ বিস্তার আর বিস্তার ও প্রেম একই কথা | সুতরাং প্রেমই জীবন, এটাই জীবনের একমাত্র গতি” – Swami Vivekananda
৩৫.“কী সামাজিক, কী রাজনৈতিক, কী আধ্যাত্মিক সব ক্ষেত্রেই যথার্ত কল্যাণের ভিক্তি একটিই আছে | সেটি এইটুকু জানা যে, আমি আর আমার ভাই এক | এই কথাটি সব দেশ ও সব জাতির পক্ষে সমান ভাবে সত্য” – Swami Vivekananda
৩৬.“চোখ আমাদের পিছনের দিকে নয় সামনের দিকে, অতএব সামনের দিকে অগ্রসর হও | আর যেই ধর্মকে নিজের ধর্ম বলে গৌরববোধ করো, তার উপদেশ গুলিকে কাজে পরিণত করো | ঈশ্বর তোমাদের সাহায্য করুন” – Swami Vivekananda
৩৭. “প্রত্যেক নারী-পুরুষকে ইশ্বরের দৃষ্টিতে দেখতে থাকো | তোমরা কাউকেই সাহায্য করতে পারোনা, কেবল সেবা করতে পারো | নিজেদের খুব বড় কিছু ভেবনা; তোমরা ধন্য যে সেবা করার অধিকার পেয়েছ, অন্যরা পায়নি” – Swami Vivekananda
৩৮.“দরিদ্র ব্যক্তিদের মধ্যে আমি যেন ঈশ্বরকে দেখি | নিজের মুক্তির জন্য তাদের কাছে গিয়ে তাদেরই পূজা করবো, ঈশ্বর তাদের মধ্যে রয়েছেন” – Swami Vivekananda
৩৯.“তোমাদের সবার ভিতর মহাশক্তি আছে, নাস্তিকের ভিতর তা নেই | যারা আস্তিক তারা বীর, তাদের মহাশক্তির বিকাশ হবেই” – Swami Vivekananda
৪০. “শুধু সংখ্যাধিক্য দ্বারাই কোনো মহৎ কাজ সম্পন্ন হয়না | অর্থ, ক্ষমতা, পান্ডিত্য কিংবা বক্তৃতা এইগুলির কোনটিরই বিশেষ কোনো মূল্য নেই” – Swami Vivekananda
৪১. “পবিত্র, খাঁটি ও প্রত্যক্ষ অনুভূতি সম্পন্ন মহাপ্রাণ ব্যক্তিরাই, জগতে সমস্ত কাজ সম্পন্ন করে থাকেন” – Swami Vivekananda
৪২.“কোনো ব্যক্তি অসত্যের দিকে আকৃষ্ট হয় তার প্রধান কারণ হলো, সে সত্যকে ধরতে পারছেনা | অতএব যা মিথ্যে তা দূর করার একমাত্র উপায় হলো, যা সত্য তা মানুষকে দিতে হবে | সত্যটা কি? তাকে সেটা জানিয়ে দেও | সত্যের সাথে সে নিজের ভাবের তুলনা করুক | তুমি তাকে সত্য জানিয়ে দিলেই ওখানেই তোমার কাজ শেষ হয়ে গেল” – Swami Vivekananda
৪৩.“অজ্ঞানতাই বন্ধনের কারণ, আমরা অজ্ঞানেই বদ্ধ হয়েছি | জ্ঞানের উদয়ের দ্বারাই অজ্ঞানতার নাশ হবে, জ্ঞানই আমাদের অজ্ঞানতার পারে নিয়ে যাবে” – Swami Vivekananda
৪৪.“কেবল আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন করতে পারলেই সবধরনের দুঃখ-কষ্ট ঘুচবে | যতই শক্তি প্রয়োগ, শাসন প্রণালীর পরিবর্তন ও আইনের কড়াকড়ি করোনা কেন, তারফলে জাতির অবস্থার পরিবর্তন হয়না | আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শিক্ষাই, প্রবৃত্তি পরিবর্তন করে জাতিকে সৎ পথে চালিত করে” – Swami Vivekananda
৪৫. “তুমি ইন্দ্রিয়ের দাস কিন্তু এই ইন্দ্রিয়ের ভোগ স্থায়ী নয়, বিনাশী এর পরিনাম | এই তিনদিনের ক্ষনস্থায়ী বিলাসের ফল সর্বনাশ | অতএব ইন্দ্রিয়ের দ্বারা সৃষ্ট সুখকে ত্যাগ করো, এটাই ধর্মলাভের উপায় | ত্যাগই আমাদের চরম লক্ষ্য ও মুক্তির পথ কিন্তু ভোগ আমাদের লক্ষ্য নয়” – Swami Vivekananda
৪৬. “মানুষকে সর্বদা তার দুর্বলতার বিষয় ভাবতে বলা, তার দুর্বলতার প্রতীকার নয় | তার শক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়াই প্রতিকারের উপায়। তার মধ্যে যে শক্তি আগে থেকেই বর্তমান, তার বিষয় স্মরণ করিয়ে দাও” – Swami Vivekananda
৪৭.“মানুষ মূর্খের মত মনে করে, স্বার্থপর উপায়ে সে নিজেকে সুখী করতে পারে। বহুকাল চেষ্টার পর অবশেষে বুঝতে পারে প্রকৃত সুখ স্বার্থতার নাশে এবং সে নিজে ছাড়া অন্য কেউই তাকে সুখী করতে পারবে না” – Swami Vivekananda
৪৮.“দর্শনবর্জিত ধর্ম কুসংস্কারে গিয়ে দাঁড়ায়, আবার ধর্মবর্জিত দর্শন শুধু নাস্তিকতায় পরিণত হয় । আমাদের নিম্নশ্রেণীর জন্য কর্তব্য এই,কেবল তাদেরকে শিক্ষা দেওয়া এবং তাদের বিনষ্টপ্রায় ব্যক্তিত্ববোধকে জাগিয়ে তোলা” – Swami Vivekananda
৪৯. “প্রথমে অন্নের ব্যবস্থা করতে হবে, তারপর ধর্ম” – Vivekananda Famous Quotes
৫০.“ভক্তি, যোগ এবং কর্ম – মুক্তির এই তিনটি পথ। প্রত্যেকের কর্তব্য তার উপযুক্ত পথটি অণুসরণ করে চলা। তবে এই যুগে কর্মযোগের উপরেই বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত” – Swami Vivekananda
TAG- স্বামী বিবেকানন্দের জীবনী ও বাণী , স্বামী বিবেকানন্দের জীবনী, Swami Vivekananda bani in bengali, Swami Vivekananda,