CET বা Common Eligibility Test পরীক্ষা পদ্ধতি কেমন বিস্তারিত জেনে নিন

পোস্টটি শেয়ার করুন
Rate this post

★ CET বা Common Eligibility Test

আপনি সরকারি চাকরীর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন? বা আগত বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরীর পরীক্ষাতে অংশ নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন? তাহলে আপনার জন্য একটু আপডেট খবর রয়েছে, মন দিয়ে পড়ুন। সকল কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরীর পরীক্ষা পদ্ধতিতে কিছু বদল আনা হচ্ছে। এখন বিভিন্ন সংস্থার দ্বারা আলাদা আলাদা ভাবে পরীক্ষা না হয়ে সর্বসাকুল্যে একটি মাত্র কেন্দ্রীয় পরীক্ষা হবে। যার নাম CET বা Common Eligibility Test।

"Amar Ujala" তে প্রকাশ হাওয়া সাম্প্রতিক রিপোর্ট
“Amar Ujala” তে প্রকাশ হাওয়া সাম্প্রতিক রিপোর্ট

Amar Ujala” তে প্রকাশ হাওয়া সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে প্রথম CET বা কমন এলিজিবিলিটি টেস্ট পরীক্ষাটি হবে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে।

■ CET সম্পর্কে কি বলা রয়েছে রাজ্য সভার রিপোর্টে?

১৪ মার্চ ২০১৮ সালে প্রকাশ হওয়া ৯৫ নম্বর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে যে পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হয় সেক্ষেত্রে পরীক্ষার্থী তথা আয়োজক সংস্থাদের নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, ফলে পরীক্ষার নিয়মানুবর্তিতা সঠিক থাকে না। তাই ২০১৯ সাল থেকে CET বা Common Eligibility Test নামক একটি প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে। যেখানে SSC, Banking বা Railway-র মত সংস্থায় নিয়োগের একক প্রবেশিকা পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। এখন ভাবছেন CET বা Common Eligibility Test আসলে কি?

■ CET বা Common Eligibility Test কি?

CET বা Common Eligibility Test হল সরকারি চাকরীর যোগ্যতা নির্ণায়ক প্রবেশিকা পরীক্ষা। CET বা Common Eligibility Test এ উত্তীর্ণ হলে বিভিন্ন দপ্তরে (SSC, Banking বা Railway) চাররী করার প্রাথমিক পর্ব অতিক্রম করে যাবেন।
এযাবৎ, আপনি যদি রেলে চাকরী করতে চাইতেন তাহলে আপনাকে রেলের পর্যিক্ষায় বসতে হত এবং ব্যাঙ্কে চাকরীর জন্য ব্যাঙ্কের পরীক্ষাতে আলাদা ভাবে অংশ নিতে হত, কিন্তু CET পরীক্ষা শুরু হলে আলাদা আলাদা ভাবে পরীক্ষা না দিয়ে কেন্দ্রীয় ভাবে একটি প্রবেশিকা পরীক্ষায় আগে উত্তীর্ণ হতে হবে।

Join us on Telegram

■ কেনো CET শুরু হচ্ছে?

বিগত পাঁচ বছরের তথ্য অনুসারে প্রায় নয়টি কেন্দ্রীয় পরীক্ষা আংশিক বা সসম্পূর্ণ রূপে বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে সরকারের আর্থিকভাবে ক্ষতির পাশাপাশি পরীক্ষার্থী রাও সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, তাদের মূল্যবান সময়গুলি নষ্ট হয়েছে, বেকারত্ব বৃদ্ধির চরম সীমায় পৌঁছচ্ছে। এমনকি সম্প্রতি SSC দুর্নীতিরর জন্য সিবিআই তদন্ত হচ্ছে। এখানেই শেষ নয়, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ সালে কমিশনের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে SSC কে ঘিরে প্রায় ২২২০ টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে ০৮টি সুপ্রিম কোর্টে এবং বাকি ২২১২ টি বিভিন্ন হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।

বিগত পাঁচ বছরে বাতিল হওয়া পরীক্ষার তালিকা
বিগত পাঁচ বছরে বাতিল হওয়া পরীক্ষার তালিকা

এর ফরস্বরূপ কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা সকল নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে এক অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা তথা CET পরীক্ষার প্রস্তাব আনা হয়েছে।
এবার প্রশ্ন হল কিকারনে বর্তমান পদ্ধতির পরিবর্তন করা হচ্ছে? কিকি সুযোগ সুবিধা রয়েছে যার উদ্দেশ্যে CET পরীক্ষা চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে? এর উত্তরের সাপেক্ষে কয়েকটি যুক্তি প্রদান করা হয়েছে সেগুলি নিম্নরূপে দেওয়া হল-
১. বিভিন্ন নিয়োগ পর্যিক্ষায় স্বচ্ছতা আনার জন্য।
২. বিভিন্ন কেন্দ্রীয় নিয়োগ পরীক্ষার অনিয়মতা, আইনি জটিলতা দূর করা।
৩. একটি পরীক্ষা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার বৃহৎ কর্মপ্রণালী ও কম জনবলের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা।

■ CET নির্বাচন প্রক্রিয়াটি কিরূপে হবে?

CET নির্বাচন প্রক্রিয়াটি দুটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল-

১. Tier-I : প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষাটি সাধারণত একটি স্ক্রীনিং টেস্ট। যেখানে ভারত সরকারের নিয়োগ সংস্থা (SSC, Railway,Banking) দ্বারা একটি একক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। এতে উত্তীর্ণ হলে পরবর্তী পর্যায়ের জন্য যোগ্যতা লাভ করা যাবে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এটিকে প্রিলিমিনালি পরীক্ষা ভাবতে পারেন।

২. Tier – II : দ্বিতীয় পর্যায়ে মেইন পরীক্ষা বা প্রধান পরীক্ষাটি হবে। এই পরীক্ষাটি আয়োজন করবে ভারত সরকারের বিভিন্ন নিয়োগ সংস্থা (যথা- SSC, Railway,Banking)। এটি হল সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির (SSC, Railway,Banking) দ্বারা স্বাধীনভাবে পরিচালিত প্রধান পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আপনার চাকরী পাকা হবে!

■ CET-র বৈধতারর সময়সীমা কত?

যদি আপনি CET পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হন তাহলে আপনার CET এর প্রাপ্ত নম্বরের বৈধতা থাকবে আগামি দুই বছর

■ CET পরীক্ষাটিতে কোন কোন ভাষা প্রচলিত?

CET পরীক্ষার প্রশ্ন শুধুমাত্র দুটি ভাষায় হবে। ইংরেজি এবং হিন্দি। অর্থাৎ এক্ষেত্রে কোনো আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার হবে না।

■ CET পরীক্ষাটি কয়টি স্তরে বিভক্ত করা হয়েছে?

CET বা কমন এলিজিবিলিটি টেস্ট পরীক্ষাটিকে সামগ্রিকভাবে তিনটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে। যথা নিম্নরূপ –
১. মাধ্যমিক স্তর (দশম শ্রেণি পর্যন্ত)
২. উচ্চমাধ্যমিক স্তর (১০+২)
৩. গ্র্যাজুয়েশন বা স্নাতক স্তর

■ CET স্নাতক স্তরের পরীক্ষা কবে হতে পারে?

সূত্রের খবর অনুসারে CET স্নাতক স্তরের পরীক্ষা হতে পারে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ। এর পরবর্তী ধাপে, সরকার চাইলে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পরীক্ষা নিতে পারে।

© লেখাটির কপিরাইট স্টুডেন্টস কেয়ার দ্বারা সংরক্ষিত । অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষিদ্ধ ।

■ CET এর জন্য নথিবদ্ধ বা রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া

সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা তথা CET বা Common Eligibility Test -এ অংশগ্রহণ করার পূর্বে আপনাকে একটি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। তবেই আপনি মূল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। সকল প্রার্থীদের নিম্নে উল্লেখ করা সাইটে নিজেদের সকল তথ্য সহকারে নথিবদ্ধকরণ করতে হবে। সমগ্র প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হওয়ার পর আপনি একটি ID নম্বর পাবেন। নম্বরটি গুছিয়ে রেখে দেবেন। এই নম্বরটি CET পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপের সময় কাজে লাগবে।

★ রেজিস্ট্রেশন এর সাইট গুলি জেনে নিন

● National Career Service (NCS)
● Ministry of Labour and Employment.

■ CET এর সুবিধাগুলি কি কি?

CET নামে যে প্রবেশিকা পরীক্ষাটি চালু হচ্ছে এর কিছু উল্লেখযোগ্য সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

১. CET চালু হলে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার দ্বারা আয়োজিত আলাদা আলাদা পরীক্ষা আর নিতে হবে না, ফলে পরীক্ষার সংখ্যা কমে যাবে এর ফলে সংশ্লিষ্ট নিয়োগ পরীক্ষা গুলির আয়োজনের জন্য যে অর্থ ব্যয় হত সেটার পরিমাণ কিছুটা কমানো সম্ভব হবে।

২. এর ফলে একজন প্রার্থী চাহিদা ও যোগ্যতা অনুসারে বিভিন্ন ধরণের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য একটি পরীক্ষা (CET) দিতে পারবে।

৩. যেহেতু CET Score এর বৈধতা ২ বছর, তাই এই দুই বছরের মধ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার নিয়োগের জন্য প্রধান পরীক্ষায় (Main Exam বা Tier- II) অংশ গ্রহণের সুযোগ পাবেন।

৪. এযাবৎ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা আলাদা আলাদা সিলেবাস অনুসারে তাদের কর্মী নিয়োগ করে এসেছে কিন্তু CET পরীক্ষা একটি মাত্র পাঠক্রমে সকলকে পরীক্ষা দিতে হবে।

৫. CET পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের বিভিন্ন রাজ্য সরকারি বা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার দ্বারাও নিয়োগ করার সুযোগ থাকছে।

■ CET পরীক্ষার কিছু অসুবিধা

১. যেহেতু CET পরীক্ষাটি শুধুমাত্র ইংরেজি ও হিন্দি মাধ্যমে হবে তাই ভারতের মত বৃহৎ দেশের বিভিন্ন অংশের আঞ্চলিক ভাষাভাষী চাকরী প্রার্থীদের কিছুটা সমস্যা হতে পারে।

২. সূত্র অনুসারে ও অনুমান সাপেক্ষে, সমগ্র ভারতে প্রায় ৫ কোটি প্রার্থী CET পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারে। তাই বিপুল প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে সকল প্রার্থীদের।

বিস্তারিত জানার জন্য সরকারি বিজ্ঞপ্তি ডাউনলোড করুন common-eligibility-test–cet–2019

♥ যদি কোনো তথ্য জানার থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন।

© লেখাটির কপিরাইট স্টুডেন্টস কেয়ার দ্বারা সংরক্ষিত । অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষিদ্ধ ।

CET, Common Eligibility Test, Rajysava Report, CET 2019, Common Eligibility Test 2019, কমন এলিজিবিলিটি টেস্ট, কেন্দ্রের নতুন নিয়োগ পরীক্ষা, আমূল বদল হল কেন্দ্রীয় নিয়োগ পরীক্ষার, CET কী

Students Care

স্টুডেন্টস কেয়ারে সকলকে স্বাগতম! বাংলা ভাষায় জ্ঞান চর্চার সমস্ত খবরা-খবরের একটি অনলাইন পোর্টাল "স্টুডেন্ট কেয়ার"। পশ্চিমবঙ্গের সকল বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের এবং সমস্ত চাকুরী প্রার্থীদের জন্য, এছাড়াও সকল জ্ঞান পিপাসু জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিবর্গদের সুবিধার্থে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।  

error: স্টুডেন্টস কেয়ার কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত !!