পদ প্রকরণ PDF |পদ কাকে বলে? পদ কত প্রকার ও কি কি? পদের শ্রেণীবিভাগ

পোস্টটি শেয়ার করুন
4/5 - (3 votes)

আজকে বাংলা ব্যকরণ থেকে পদ প্রকরণ, পদ কাকে বলে (Pod Kake bole) পদ কত প্রকার ও কি কি? পদের শ্রেণীবিভাগ সহ বিভিন্ন প্রকার পদের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে, যা বিভিন্ন পরীক্ষাতে খুবই কাজে লাগবে।

পদ কাকে বলে?

শব্দ বা ধাতু বিভক্তিযুক্ত হয়ে বাক্যে স্থানলাভের যোগ্যতা পেলে, বিভক্তিযুক্ত সেই শন্দ বা ধাতুকে পদ বলা হয়। সরল ভাষায় বলা যায়, বাক্যে ব্যবহৃত প্রত্যকটি শব্দই একেকটি পদ। যেমন রাম ভাত খায়। রাম হল সর্বনাম পদ, ভাত হল বিশেষ্য পদ এবং খায় হল ক্রিয়াপদ।

আরও পড়ুনঃ 700+ পদ পরিবর্তন তালিকা PDF

অন্যভাবে আলোচনা করে দেখানো হল, যখন কোনো শব্দ বা ধাতু বিভক্তিযুক্ত হয়ে বাক্য গঠন করে, তখন সেই শব্দ বা ধাতুকে পদ বলা হয়। একটি উদাহরণ দিয়ে বোঝানো হল: ‘বালকরা স্কুলে পড়ে’ এই বাক্যের মধ্যে ‘বালক’ শব্দটির সাথে “রা”,স্কুল’ শব্দটির সাথে “”, এবং ‘পড়’ ধাতুর সাথে “” যুক্ত হয়ে বাক্যটিকে অর্থপূর্ণ বাক্যে পরিণত করেছে। এখানে “রা”, “এ”, “এ” হলো এক একটি বিভক্তি। এই বিভক্তি সমূহ শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে শব্দগুলিকে পদে রূপান্তর করেছে।

Join us on Telegram

পদ কত প্রকার ও কি কি?

পদ কত প্রকার ও কি কি এই প্রশ্নের উত্তর বিভিন্নজন বিভিন্ন ভাবে দিয়েছেন। তবে আলোচনার সুবিধার্থে আমরা পদকে প্রধান দুটি ভাগে ভাগ করে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো।

সাধারণত পদকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

  1. নাম পদ।
  2. ক্রিয়াপদ।

(A) নাম পদ কাকে বলে?

শব্দের সঙ্গে শব্দ বিভক্তি যুক্ত হয়ে গঠিত পদকে নাম পদ বলে। উদাহরনঃ আকাশে অসংখ্য তারা জ্বলজ্বল করছে। এখানে আকশ হল একটি শব্দ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘এ ‘ বিভক্তি । এর ফলে নাম পদ তৈরি হয়েছে। নাম পদের বিভক্তিহীন মূল অংশটি হল শব্দ।

নাম পদ কত প্রকার ও কি কি?

নাম পদ চার প্রকার যথা –

  1. বিশেষ্য পদ
  2. বিশেষণ পদ
  3. সর্বনাম পদ
  4. অব্যয়।

(1) বিশেষ্যপদ কাকে বলে?

যে শব্দে কোনো ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, জাতি, সমষ্টি, কর্ম, ভাব, কাল গুণ, অবস্থা বুঝায় তাকে বিশেষ্য পদ বলা হয়। বিশেষ ভাবে বলা হয় বলে একে বিশেষ্যপদ বলে। বিশেষ্য কথার অর্থ হল কোনো কিছুর নাম। উদাহরণ: মানুষ, রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর, বেদ, আকাশ, নজরুল, কলকাতা, হিমালয়, গঙ্গা, পদ্মা, মেঘনা, অগ্নিবীণা, সভা, সংঘ, সোনা, রূপা ইত্যাদি।

বিশেষ্য পদের শ্রেণিবিভাগ

বিশেষ্য পদকে ছয়টি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

  1. সংজ্ঞা বা নাম বাচক বিশেষ্য পদ- যে বিশেষ্য পদের দ্বারা কোনো ব্যক্তি, স্থান, কাল, দেশ, পর্বতকে বোঝানো হয় তাকে সংজ্ঞা বা নাম বাচক বিশেষ্য পদ বলে। উদাহরণ: রাম, রহিম, গঙ্গা, যমুনা, সোনা, রূপা, কলকাতা, সুভাষ, নজরুল, বাইবেল, রামায়ণ প্রভৃতি।
  2. জাতিবাচক বিশেষ্যপদ- যে বিশেষ্য পদের দ্বারা কোনো বিশেষ জাতি বা বস্তু বা প্রাণীকে বোঝানো হয়, তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য পদ বলে। উদাহরণ: মানুষ, ফুল, ফল, ছেলে, মেয়ে, পাহার, নদী, হিন্দু, মুসলিম, শিখ, বৌদ্ধ, বাঙালী ইত্যাদি।
  3. বস্তুবাচক বিশেষ্য যে বিশেষ্য পদের দ্বারা কোনো বস্তুর নাম বোঝায়, তাকে বস্তুবাচক বিশেষ্য পদ বলে। উদাহরণ: খাতা, কলম, বাই, পানি, দুধ, ডাল, সোনা, রুপা ইত্যাদি।
  4. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য যে বিশেষ্য পদের দ্বারা কোনো কিছুর সমষ্টিকে বোঝানো হয়, তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য পদ বলে। উদাহরণ: দল, সভা, সমিতি, জনতা, সংঘ, বাহিনী, পাল, ঝাঁক ইত্যাদি।
  5. ভাববাচক বিশেষ্য পদ- যে বিশেষ্য পদের দ্বারা মনের ভাব প্রকাশ করা হয়, তাকে ভাববাচক বিশেষ্য পদ বলে। উদাহরণ: ভ্রমণ, গমন, শয়ন, দর্শন, ভোজন, শ্রবণ, বর্জন, দেখা ইত্যাদি।
  6. গুণবাচক বিশেষ্য যে বিশেষ্য পদের দ্বারা কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর দোষ, গুণ, অবস্থা ও ভাবের নাম প্রকাশ করা হয়, তখন তাকে গুণবাচক বিশেষ্য পদ বলে। উদাহরণ: রাগ, হিংসা, ঘৃণা, সুখ, দুঃখ, দারিদ্র্য, যৌবন, স্বাস্থ্য ইত্যাদি।
  7. ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য- যে বিশেষ্য পদের দ্বারা কোনো কাজের নাম বোঝানো হয়, তাকে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য পদ বলে। উদাহরণঃ দর্শন, ভোজন, শয়ন, গমন প্রভৃতি।

(2) বিশেষণ পদ কাকে বলে?

যখন কোনো পদের গুণ, পরিমাণ, অবস্থা, সংজ্ঞা, ধর্ম ইত্যাদি বোঝানোর জন্য যে শব্দ ব্যবহৃত হয় তাকে বিশেষণ পদ বলে। বিশেষণ পদটিকে বিশেষিত করে সাধারণত তার পূর্বে বসে।

উদাহরণঃ উজ্জ্বল নক্ষত্র, ধবধবে সাদা বিছানা, চলন্ত ট্রেন, বিনয়ী ছাত্রকে সকল শিক্ষকই ভালোবাসেন। বাক্যগুলিতে উজ্জ্বল, ধবধবে, চলন্ত, বিনয়ী শব্দগুলি কোনো পদের গুণ, পরিমাণ, অবস্থাকে বুঝিয়েছে।

বিশেষণ পদের শ্রেণিবিভাগ

বিশেষণ পদকে পাঁচভাগে ভাগ করা যায়। যেমন—

(i) বিশেষ্যের বিশেষণ পদ-

যে পদ বিশেষ্য পদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ, ইত্যাদি প্রকাশ করে তাকে বিশেষ্যের বিশেষণ বলে। যেমনমেঘলা আকাশ, বিদ্বান মানুষ, সাতদিন পরে দেখা, অসুস্থ মানুষ, অনেক লোক, ভালো ছাত্র।

(ii) সর্বনামের বিশেষণ:

যে বিশেষণ পদ কোনো সর্বনাম পদের গুণ, প্রকৃতি ইত্যাদি বোঝায় তাকে সর্বনামের বিশেষণ বলে। যেমনবোকা তুমি, তাই ওদের কথা বিশ্বাস করলে, মূর্খ তুই, এ কথার কী বুঝবি?

(iii) বিশেষণের বিশেষণ:

যে বিশেষণ পদ অন্য বিশেষণ পদের গুণ বা অবস্থা প্রকাশ করে তাকে বিশেষণের বিশেষণ বলে। যেমনখুব গরম দুধ, নিতান্ত ভালো মানুষ, অতি বড় নিন্দুকেও একথা বলতে পারবে না।

(iv) অব্যয়ের বিশেষণ:

যে পদ কোনো অব্যয় পদের গুণ, অবস্থা, সংখ্যা ইত্যাদি প্রকাশ করে তাকে অব্যয়ের বিশেষণ বলে। যেমন—ঠিক নীচে, শত ধিক্‌, ঠিক ওপরে দেখতে পাবে।

(v) ক্রিয়ার বিশেষণ:

যে বিশেষণ পদ ক্রিয়ার গুণ, অবস্থা ইত্যাদি নির্ণয় করে তাকে ক্রিয়ার বিশেষণ বলে। যেমন—সে তাড়াতাড়ি লেখে, মিনতি আস্তে আস্তে লেখে।

(3) সর্বনাম পদ কাকে বলে?

বিশেষ্য পদের পরিবর্তে যে পদ ব্যবহৃত হয় তাকে সর্বনাম পদ বলে। অথবা, পূর্বে উল্লিখিত কোনো বিশেষ্য পদের পুনরুল্লেখ না করে, তার পরিবর্তে যে পদ ব্যবহার করা হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলে। আসলে একই বিশেষ্য পদ বার বার ব্যবহার না করে তার পরিবর্তে যে পদ ব্যবহৃত হয় তাই সর্বনাম পদ।

উদাহরণ– বর্ষা সকালে পড়াশোনা করে। বর্ষা দুপুরবেলায় স্কুলে যায়। বর্ষা বিকালবেলায় টেনিস খেলে। বর্ষা সন্ধ্যাবেলা পড়তে বসে। উপরে কথিত বাক্যগুলিতে বর্ষা শব্দটি চারবার ব্যবহৃত হয়েছে। তার ফলে একটা একঘেঁয়েমি এসেছে। তাই বাক্যগুলিকে যদি এইভাবে লেখা যায়— “বর্ষা সকালবেলায় পড়াশোনা করে। সে দুপুরবেলায় স্কুলে যায়। সে বিকালে টেনিস খেলে। সে সন্ধ্যেবেলা পড়তে বসে। এখানে বর্ষার পরিবর্তে ‘সে’ শব্দটি ব্যবহ হয়েছে। তাই ‘সে’ সর্বনাম পদ।

সর্বনাম পদের শ্রেণিবিভাগঃ

সর্বনাম পদ প্রধানত দুইপ্রকার—(i) সাপেক্ষ সর্বনাম, (ii) নিরপেক্ষ সর্বনাম।

(i) সাপেক্ষ সর্বনাম:

তিনি, সে, উনি, তাহাকে, তাহাদের, তাহার, তাঁহার, এটি, এইটি প্রভৃতি শব্দগুলি বিশেষ্য পদের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়। এদের প্রকৃত অর্থ বোঝাবার জন্য বিশেষ্য পদের অপেক্ষা করতে হয়। আর এ কারণেই এদের সাপেক্ষ সর্বনাম পদ বলা হয়।

(ii) নিরপেক্ষ সর্বনাম:

তুমি, আপনি, আমি, আমরা প্রভৃতি শব্দগুলি কোনো বিশেষ নাম নয়। কিন্তু কোনো না কোনো ব্যক্তির পরিবর্তে বসে বলে এগুলিও সর্বনাম। এরা বিশেষ্য পদের অপেক্ষা না রেখেই বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে বলে এরা নিরপেক্ষ সর্বনাম পদ।

ওপরে কথিত ভাগ দুটি ছাড়াও সর্বনামকে আরও কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন—

(i) ব্যক্তিবাচক সর্বনাম:

আমি, তুমি, আমরা, তোমরা, সে, তিনি, তারা, তাহারা, তাঁরা, এরা, এ, ও, ওরা ইত্যাদি শব্দগুলি কোনো না কোনো ব্যক্তির পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়েছে। তাই এরা ব্যক্তিবাচক সর্বনাম।

(ii) নির্দেশক সর্বনাম:

ইনি, উনি, এটি, সেটি, ওটা, এই, ওই প্রভৃতি শব্দগুলি কোনো না কোনো বস্তু বা ব্যক্তিকে নির্দেশ করে। তাই এদের নির্দেশক সর্বনাম বলে।

(iii) অনির্দেশক সর্বনাম:

কেউ, কেহ, কেউ কেউ প্রভৃতি শব্দগুলি কোনো নির্দিষ্ট কিছু নির্দেশ করে না। তাই এদের অনির্দেশক সর্বনাম বলে।

(iv) প্রশ্নবাচক সর্বনাম:

কে, কী, কি, কোনটা, কাহার, কেন, কোন, কিসে, কার ইত্যাদি শব্দগুলির দ্বারা কোনো প্রশ্ন করা যায়—তাই এগুলি প্রশ্নবাচক সর্বনাম।

(v) আত্মবাচক সর্বনাম:

নিজে নিজে, স্বয়ং, আপনি প্রভৃতি শব্দগুলির দ্বারা কোনো ব্যক্তি নিজেকে প্রকাশ করে সে কারণেই এগুলিকে আত্মবাচক সর্বনাম বলে।

(vi) সম্বন্ধসূচক সর্বনাম:

তার, তাঁহার, নিজের প্রভৃতি শব্দগুলির দ্বারা অন্য পদের সঙ্গে সম্বন্ধ প্রকাশ করে এ কারণেই এদের সম্বন্ধসূচক সর্বনাম বলে।

(vii) সমষ্টিবাচক বা সাকুল্যবাচক সর্বনাম:

সকলের, সকলে, সমস্ত, উভয়, উভয়কে, সমুদয়, তাবৎ প্রভৃতি শব্দের দ্বারা সকল বা সমস্ত বোঝায়। তাই এদের সমষ্টিবাচক সর্বনাম বলে।

(viii) সাপেক্ষ সর্বনাম:

যে-সে, যার-তার, যিনি-তিনি, যা-তা প্রভৃতি সর্বনাম পদগুলি একে অন্যের সঙ্গে যুগ্মভাবে ব্যবহৃত হয়, একারণে এদের সাপেক্ষ সর্বনাম বলে।।

(4) অব্যয় পদ কাকে বলে?

লিঙ্গ, বচন, পুরুষ ও বিভক্তিতে যে পদের কোনো পরিবর্তন হয় না, তাকেই অব্যয় পদ বলে। অর্থাৎ, সকল লিঙ্গ, বচন, পুরুষ ও বিভক্তিতে যে পদ একইরূপে থাকে, কোনো অবস্থাতে যার কোনোরূপ পরিবর্তন হয়না, তাকেই অব্যয় বলে।

অব্যয় ছাড়া সব পদেরই লিঙ্গ, বচন ও বিভক্তিতে পরিবর্তন হয়। যেমন—বাঃ! কী মনোরম দৃশ্য। দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে? তোমার কিন্তু অবশ্যই যাওয়া চাই। রাম এবং লক্ষ্মণ বন গমন করেছিলেন। এখানে বাঃ, বিনা, কিন্তু, এবং ইত্যাদি পদগুলির দ্বারা কোনো না কোনো ভাব প্রকাশ পেয়েছে। এই পদগুলি দুটি বাক্যের মধ্যে সম্বন্ধ ঘটিয়েছে। এছাড়া এই পদগুলির কোনো পরিবর্তন হয় না।

অব্যয় পদ কে কয় ভাগে ভাগ করা যায়?

অব্যয় পদ প্রধানত তিন প্রকার। যথা-

(i) পদান্বয়ী অব্যয় পদ-

যে অব্যয় পদ বাক্যের মধ্যে ব্যবহৃত হয়ে এক পদের সঙ্গে অন্য পদকে সংযুক্ত করে, তাকে পদান্বয়ী অব্যয় বলে। যেমন—দুঃখ ব্যতীত সুখ লাভ হয় না। তরুণ সুরেন আজ ফুটবল খেলবে। বিয়েতে আপনার কিন্তু আসা চাই।

ওপরে কথিত বাক্য তিনটিতে ব্যতীত, ও, কিন্তু এই অব্যয়গুলি বাক্যের মধ্যে বসে এক পদের সঙ্গে অন্য পদকে যুক্ত করেছে। সুতরাং এগুলি পদান্বয়ী অব্যয়।

(ii) অনন্বয়ী অব্যয় পদ-

যে অব্যয় পদের সঙ্গে বাক্যের অন্যান্য পদের কোনো সম্বন্ধ থাকে না, তাকে অনন্বয়ী অব্যয় বলে। যেমন—বাঃ! কী সুন্দর দৃশ্য ! হায়! আমার কপালে কি এই ছিল? মা, আমাকে আশীবাদ করো। এখানে বা, হায়, মা—এই তিনটি পদ বাক্যের বাইরে বসে প্রশংসা, খেদ, সম্বোধন ইত্যাদি বুঝিয়েছে। এই পদগুলির দ্বারা মনের বিশেষ ভাব প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু সবকটি ক্ষেত্রেই মূল বাক্যের সঙ্গে এদের কোনো সম্বন্ধ নেই।

(iii) বাক্যান্বয়ী অব্যয় পদ

যে অব্যয় বাক্যে অন্বয় বা সম্বন্ধ স্থাপন করে তাদের বাক্যান্বয়ী বা সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে। বাক্যান্বয়ী অব্যয়কে ছয় শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়। যেমন-

  1. সংযোজক অব্যয়: যেমন—আমি খেলার মাঠে গিয়েছিলাম; কিন্তু তোমায় দেখতে পাইনি। বাবা এবং মায়ের কথা শোনা উচিত।
  2. বিয়োজক অব্যয় : যেমন—হয় তুমি একাজ কর নয় তাকে কাজটি করতে দাও। তুমি অথবা সমর সেখানে যাবে।
  3. সংকোচক অব্যয় : যেমন—এখন খেলা বন্ধ করে বরং পড়াশোনায় মন দাও। ভালো খেলোয়াড় হয়েছ জানি; তবুও মন দিয়ে পড়াশোনা করো।
  4. হেতুবাচক অব্যয় : যেমন—বাবা আমাকে মেরেছেন কারণ আমি তার কথা শুনিনি। আপনি তাড়াতাড়ি আসবেন কেননা আমি পড়তে যাবো।
  5. সিদ্ধান্তবাচক অব্যয় : যেমন—মশায় কামড়েছে তাই ম্যালেরিয়া হয়েছে। তুমি আসবে বলে আমি বসেছিলাম।
  6. নিত্য সম্বন্ধীয় অব্যয় : যেমন- বটে-কিন্তু, যেমন-তেমন, যখন-তখন, যেমনি কর্ম তেমনি ফল।

(B) ক্রিয়াপদ কাকে বলে?

যে পদের সাহায্যে কোনো কাজ করা, হওয়া বা থাকা বোঝায় তাকে ক্রিয়াপদ বলে। অথবা, বাক্যের অন্তর্গত যে পদের দ্বারা বিশেষ্যের যাওয়া, আসা, করা, থাকা, খাওয়া প্রভৃতি কোনো কাজ করা বোঝায় তাকে ক্রিয়াপদ বলে।

ধাতুর সাথে ধাতুবিভক্তিযোগে ক্রিয়াপদ গঠিত হয়।

উদাহরণ—সহেলী নাচছে। সায়ন বই পড়ছে। মিঠু ভালো ছবি আঁকে।

ক্রিয়াপদের শ্রেণিবিভাগঃ

ক্রিয়াপদ দু-প্রকারের—(i) সমাপিকা ক্রিয়া ও (ii) অসমাপিকা ক্রিয়া।

(i) সমাপিকা ক্রিয়া-

যে ক্রিয়াপদের দ্বারা মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয়, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন – সুব্রত বিদ্যালয় থেকে ফিরে ভাত খেল। বর্ষা সন্ধ্যাবেলায় পড়তে বসল।

ওপরের দুটি বাক্যে ‘খেল’ এবং ‘বসল’ ক্রিয়াপদের দ্বারা মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পাচ্ছে। সুতরাং এ-দুটি সমাপিকা ক্রিয়া।

(ii) অসমাপিকা ক্রিয়া-

যে ক্রিয়াপদের দ্বারা মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায় না, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন—ওপরের দুটি বাক্যে ‘ফিরে’ এবং ‘পড়তে ক্রিয়াপদ দুটির দ্বারা মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায় না। তাই এ-দুটি অসমাপিকা ক্রিয়া।

সাধারণভাবে অসমাপিকা ক্রিয়া বাক্যের মাঝে বসে এবং সমাপিকা । ক্রিয়াপদ বাক্যের শেষে বসে।।

অর্থভেদে সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়াকে আবার দু-ভাগে ভাগ করা যায়—

(a) সকর্মক ক্রিয়া ও (b) অকর্মক ক্রিয়া।

  1. সকর্মক ক্রিয়া: যে ক্রিয়ার কর্ম থাকে, তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন—বর্ষা বই পড়ে। কবিতা ভাত খায়। মিঠুন দাবা খেলে। এই বাক্যগুলিতে ‘বই’, ‘ভাত’, ‘দাবা’—শব্দগুলি কর্ম। তাই ক্রিয়াগুলি সকর্মক ক্রিয়া। ক্রিয়ার ওপর কী দিয়ে বাক্যকে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তাই ক্রিয়ার কম।
  2. অকর্মক ক্রিয়া : যে সব ক্রিয়ার কর্ম থাকে না, তাদের অকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন—আমি যাই। ললিতা পড়ে। তপন ঘুমায়। এই বাক্যগুলিতে কর্ম নেই, তাই এরা অকর্মক ক্রিয়া। কারণ কী খাই, কী। পড়ে, কী ঘুমায় প্রশ্ন করলে কোnO উত্তর পাওয়া যায় না।

দ্বিকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে?

যে ক্রিয়ার দুটি কর্ম থাকে তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন—শিক্ষিকা ছাত্রীকে ব্যাকরণ পড়াচ্ছেন। এই বাক্যটিতে দুটি কর্ম—ছাত্রীকে এবং ব্যাকরণ। এদের মধ্যে একটি মুখ্য কর্ম অপরটি গৌণ কর্ম। সাধারণত বস্তুবাচক ও অপ্রাণীবাচক শব্দ মুখ্য কর্ম এবং প্রাণীবাচক শব্দ গৌণ কর্ম হয়ে থাকে।

পদ প্রকরণ PDF Download Section

  • File Name: পদ প্রকরণ
  • Page: 7
  • Size: 500 kb
  • Download Link: Below

Students Care

স্টুডেন্টস কেয়ারে সকলকে স্বাগতম! বাংলা ভাষায় জ্ঞান চর্চার সমস্ত খবরা-খবরের একটি অনলাইন পোর্টাল "স্টুডেন্ট কেয়ার"। পশ্চিমবঙ্গের সকল বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের এবং সমস্ত চাকুরী প্রার্থীদের জন্য, এছাড়াও সকল জ্ঞান পিপাসু জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিবর্গদের সুবিধার্থে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: স্টুডেন্টস কেয়ার কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত !!