বল কাকে বলে PDF? বলের একক কি? বল কত প্রকার ও কি কি? Free PDF

পোস্টটি শেয়ার করুন
5/5 - (1 vote)

বল কাকে বলে PDF: আজ আপনাদের সাথে পদার্থ বিজ্ঞানের বল নিয়ে আলোচনা করবো। আপনারা এ পোস্ট পড়ে জানতে পারবেন বল কাকে বলে? বলের একক কি? বল কত প্রকার ও কি কি? মৌলিক বল কাকে বলে? যৌগিক বল কাকে বলে?মহাকর্ষ বল কাকে বলে? অভিকর্ষ বল কি? তড়িৎ – চুম্বকীয় বল কাকে বলে? সবল নিউক্লীয় বল কাকে বলে? দুর্বল নিউক্লীয় বল কাকে বলে? ইত্যাদি । অবশেষে পোস্টের শেষে বিনামূল্যে বল কাকে বলে PDF -টি ডাউনলোড করে নেওয়ার সুযোগ অবশ্যই থাকছে।

পরিচ্ছেদসমূহ

লেখক- সুমন পাত্র, হাওড়া (পশ্চিমবঙ্গ) [লেখা পাঠানোর ঠিকানা- [email protected]]

বল কাকে বলে? (What is force in Bengali?)

বলের ইংরেজি শব্দ ‘Force’ নিউটনের প্রথম সূত্রে প্রথমবার বল শব্দটির প্রয়োগ দেখানো হয়েছে। বাইরে থেকে যা প্রয়োগ করে কোন অচল বা স্থির বস্তুকে সচল বা গতিশীল অবস্থায় আনা হয় বা আনার চেষ্টা করা হয় কিংবা সচল বস্তুর গতির মান বা দিক পরিবর্তন করা হয় বা করার চেষ্টা করা হয়, তাকে বল বলা হয়।

বলের উদাহরণ- একটি ফুটবল একজন খেলোয়াড় হতে অন্য খেলোয়াড়ের নিকট এমনিতেই যায় না। ফুটবলের উপর বল প্রয়োগের ফলেই সেটা ঘটে। আবার গোল করার লক্ষ্যে ফুটবলটিকে ছুড়ে দিলে গোলকিপার তা ধরে ফেলে এক্ষেত্রেও তাকে বল প্রয়োগ করতে হয়েছে।

Join us on Telegram

বলের রাশি কি?

একটি বল একটি ভেক্টর রাশি। একটি ভেক্টর রাশি হল একটি রাশি যার মাত্রা এবং দিক উভয়ই রয়েছে।

বলের একক কী কী?

বলের বিভিন্ন পরম একক গুলি নিম্নে দেওয়া হল। যেমন-

  • সেন্টিমিটার গ্রাম সেকেন্ড বা সি.জি.এস (CGS Unit) পদ্ধতিতে বলের একক ডাইন (Dyn) বা gcm/s2
  • M.K.S বা মিটার কিলোগ্রাম সেকেন্ড পদ্ধতিতে বা স্ট্যান্ডার্ড ইন্টারন্যাশনাল পদ্ধতিতে (SI Unit) বলের একক নিউটন (N) বা Kgm/s2
  • F.P.S বা ফুট পাউন্ড সেকেন্ড পদ্ধতিতে বলের একক Poundal (পাউন্ডাল)।

বিঃদ্রঃ

  • 1 নিউটন= 105 ডাইন,
  • 1 kg- ভার= 9.81 নিউটন,
  • 1 gm- ভার= 981 ডাইন

বলের মাত্রা কি?

বলের মাত্রা হল-  [MLT-2]

ভৌত বিজ্ঞানের আরও কিছু পোস্ট-

বল পরিমাপের সমীকরণটি কি?

বলকে সাধারণত F (Force) দ্বারা প্রকাশ করা হয়। m ভরের কোনো বস্তুর উপর F বল প্রয়োগ করা হলে ত্বরণ a সৃষ্টি হয়, F = ma অর্থাৎ ত্বরণ এবং ভরের গুণফল দ্বারা বল পরিমাপ করা হয়।

ভর (m) এবং ত্বরণ (a) এর ভেক্টর গুণফল দ্বারা বলের পরিমান প্রকাশ করা হয়। সমীকরণ বা বলের সূত্র গাণিতিকভাবে এভাবে প্রকাশ করা যেতে পারে:

সূত্র- F = ma যেখানে, F এর হলো Force(বল) a এর হলো acceleration(ত্বরণ)

অর্থাৎ, বল হলো ভর এবং ত্বরণের গুণফলের সমান। এছাড়াও m ভরের কোনো বস্তুকে F বল প্রয়োগ করলে a ত্বরণ সৃষ্টি হবে।

ত্বরণ = বেগ/সময় অর্থাৎ , a = v/t

F = ma

F= mv/t

mv হলো ভরবেগ এবং t হলো সময় তাই, বলকে ভরবেগের পরিবর্তনের হার হিসাবে উচ্চারিত করা যেতে পারে।

বলের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব:

  • বল একটি স্থির বস্তুকে গতিশীল এবং গতিশীল বস্তুকে স্থির করতে পারে।
  • একটি বস্তুর গতির দিক পরিবর্তন করতে।
  • একটি বস্তুর গতির বেগ (গতি) এর মাত্রা পরিবর্তন করতে।
  • বল একটি বস্তুর আকৃতি পরিবর্তন করতে পারে।

বলের বৈশিষ্ট্য গুলি কী কী? (Characteristics of Force)

  1. বল একটি ভেক্টর রাশি। কারণ এর মান ও দিক আছে।
  2. কোনো স্থির বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল সেই স্থিতিশীল বস্তুকে গতিশীল করতে পারে।
  3. বল সর্বদা জোড়ায় জোড়ায় ক্রিয়া করে। অর্থাৎ কোন বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করলে প্রযুক্ত বলের বিপরীত দিকে আরেকটি বল ক্রিয়া করে। একারণে বলের ক্রিয়াকে Interaction বা মিথস্ক্রিয়াও বলে। যেমন যখন কোন বস্তুকে দড়িতে বেধে টানা হয় তখন প্রযুক্ত বলের বিপরীত দিকে দড়িতে যে একটা বল ক্রিয়া করে তাকে টান বল বলে।
  4. কেনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগের ফলে বস্তুর বিকৃতি ঘটতে পারে।
  5. যতক্ষণ লব্ধ বল ক্রিয়াশীল থাকে ততক্ষণ উক্ত বস্তুতে ত্বরণ সৃষ্টি হয়।

বলের নামকরণের প্রকারভেদ গুলি কী কী?

উৎস বা প্রয়োগ ক্ষেত্রের উপর ভিত্তি করে বলকে বিভিন্ন নামে নামকরণ করা হয়েছে। যেমন: টান, চাপ, ঠেলা, ঘর্ষণ, আকর্ষণ, বিকর্ষণ, ওজন ইত্যাদি।

1. টান (Tension): কোনো বস্তুকে একটি সরু রশি বা তার দ্বারা টানা হলে ঐ রশি বা তার বরাবর বস্তুটির উপর যে বল ক্রিয়া করে তাকে টান বলে।

2. চাপ (Pressure): যখন একটি বস্তুকে অপর একটি বস্তুর উপর রাখা হয়, তখন প্রথম বস্তুটি দ্বিতীয় বস্তুর উপর যে বল প্রয়োগ করে তাকে চাপ বলে।

3. ঠেলা (Thrust): অনেক সময় দেখা যায় বাস (বা অন্য কোনো গাড়ী) কোনো স্থানে রাখা ছিল, এখন স্টার্ট দেওয়ার সময় স্টার্ট নিচ্ছে না। এমন অবস্থায় বাসটিকে কতকগুলি লোক বল প্রয়োগ করে সামনে বা পিছনে সরানোর চেষ্টা করে এবং গড়ালেই ড্রাইভার স্টার্ট করতে সক্ষম হন। এই ক্ষেত্রে যে বল প্রয়োগ করে গাড়িকে গড়ানো হয় তাকে ঠেলা বা ধাক্কা বল বলে।

4. ঘর্ষণ (Friction): একটি বস্তু অপর একটি বস্তুর উপর দিয়ে (স্পর্শ করে) চলতে গেলে বাধাপ্রাপ্ত হয়। যেমন- তুমি যদি একটি ফুটবলে শট দাও তবে তা কিছুক্ষণ ভূমিতে গড়ানোর পরে থেমে যাবে। ফুটবলটি নিশ্চয়ই কোনো বাধার কারণে থেমে গেছে। এখানে ভূমির স্পর্শে গড়ানোর কারণে যে বল বাধা হিসেবে কাজ করে তাকে ঘর্ষণ বল বা সংক্ষেপে ঘর্ষণ এবং যে বিন্দুতে স্পর্শ করে ঐ বিন্দুকে ঘর্ষণ বিন্দু বলা হয়।

5. আকর্ষণ (Attraction): বাহ্যিক কোনো বল (যেমন- চাপ, ঠেলা, ধাক্কা) প্রয়োগ ছাড়াই একে অপরকে স্পর্শ করেনি এরূপ দুইটি বস্তু যে বলের ক্রিয়ার কারণে একে অপরের দিকে অথবা যে কোন একটি অপরটির দিকে অগ্রসর হয় বা হওয়ার প্রবণতা সৃষ্টি হয় তাকে আকর্ষণ বল বা সংক্ষেপে আকর্ষণ বলে। যেমন, একটি লৌহ খণ্ড চুম্বকের আকর্ষণে চুম্বকের দিকে অগ্রসর হয়, পৃথিবীর আকর্ষণে বৃন্তচ্যুত ফল মাটিতে পড়ে।

6. বিকর্ষণ (Reputation): বাহ্যিক কোনো বল প্রয়োগ ব্যতিরেকে একে অপরকে স্পর্শ করেনি এরূপ দুইটি বস্তু যে বলের ক্রিয়ার ফলে একটি অন্যটি থেকে সরে যায়, তাকে বিকর্ষণ বল বা সংক্ষেপে বিকর্ষণ বলে। চুম্বকের সমজাতীয় দুই মেরু কাছাকাছি আনলে চুম্বকদ্বয় পরস্পর হতে দূরে সরে যাবে। এই বলটিই বিকর্ষণ বল।

7. ওজন (Weight): কোনো বস্তুকে পৃথিবী তার কেন্দ্রের দিকে যে পরিমাণ আকর্ষণ বল দ্বারা টানে তাকে ঐ বস্তুর ওজন বলা হয়। বস্তুর ওজন সর্বদা বস্তুর ওপরস্থ একটি নির্দিষ্ট বিন্দু দিয়ে খাড়া নিচের দিকে ক্রিয়াশীল। ঐ নির্দিষ্ট বিন্দুটিকে বস্তুর ভারকেন্দ্র (Centre of gravity) বলা হয়।

বলের প্রকারভেদ বা শ্রেণীবিভাগটি কেমন?

প্রকৃতিতে বিভিন্ন ধরণের বল রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান দুটি বল হল

1) মৌলিক বল এবং 2) যৌগিক বল।

(1) মৌলিক বল কাকে বলে?

যে সকল বল অকৃত্তিম অর্থাৎ অন্য বল থেকে উৎপন্ন হয় না এবং বিশ্লেষণ করলে ঐ বল ব্যতীত আর কোন বল পাওয়া যায় না বরং  অন্যান্য বল এই সকল বল থেকে উৎপন্ন হয় তাকে মৌলিক বল বলে।  উদাহরণ– মহাকর্ষ বল, তড়িৎ – চুম্বকীয় বল ইত্যাদি।

মৌলিক বল কয় প্রকার ও কী কী?

প্রকৃতিতে মৌলিক বল চার প্রকার। যথা-

  • A। মহাকর্ষ বল (Gravitational force)
  • B। তড়িৎ – চুম্বকীয় বল (Electromagnetic force)
  • C। সবল নিউক্লীয় বল (Strong nuclear force)
  • D। দুর্বল নিউক্লীয় বল (Weak nuclear force)

A) মহাকর্ষ বল (Gravitational force) কাকে বলে?

মহাকর্ষ বলকে ইংরেজিতে “Gravitational force” বলে। মহাবিশ্বের যে কোন স্থানে দুটি বিন্দু বা কণা স্থাপন করলে তারা একে অপরকে নিজেদের ভরের সমানুপাতে আকর্ষন করে। দুটি কণার মধ্যবর্তী এ আকর্ষন বলকে মহাকর্ষ বল বলে। সমস্ত বলের মধ্যে সবচাইতে দুর্বল বল হলো মহাকর্ষ বল।

এই বলের পরিমাণ ক্রিয়াশীল বস্তু দুটির ভরের গুণফলের সমানুপাতিক এবং বস্তুদ্বয়ের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক। এই মহাকর্ষ বলের প্রভাবে সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী ঘোরে, গ্যালাক্সির ভেতরে নক্ষত্ররা ঘুরপাক খায়। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন যে বস্তুদ্বয়ের মধ্যে গ্রাভিটন (Graviton) নামক এক প্রকার কণার পারস্পরিক বিনিময়ের দ্বারা এই মহাকর্ষ বল ক্রিয়াশীল হয়। মহাকর্ষ বল মাধ্যমের প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল নয়।

B) তড়িৎ–চুম্বকীয় বল (Electromagnetic force) কাকে বলে?

তড়িৎ চৌম্বক বলকে বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বলও বলা হয়। ইংরেজিতে এ বলকে Electromagnetic force বলে। দুটি আহিত কণা তাদের আধানের কারণে একে অপরের উপর যে আকর্ষন বা বিকর্ষন বল প্রয়োগ করে তাকে তড়িৎ চুম্বকীয় বল বলে। চৌম্বক বল এবং তড়িৎ আকর্ষণ এবং বিকর্ষণ উভয় ধরনের হতে পারে। ধারণা করা হয় যে , মূলত চার্জহীন এবং ভরহীন ফোটন নামক এক প্রকার কণার পারস্পরিক বিনিময়ের মাধ্যমে এই বল কার্যকর হয়। এর আপেক্ষিক সবলতা ১০^৩৯।

১৭৮৪ সালে কুলম্ব প্রথম দুটি আহিত কনার মধ্যে স্বতন্ত্রভাবে বিদ্যমান তড়িতচৌম্বকীয় বলের অস্তিত্ব খুজে পান।

মৌলিক বলগুলোর শক্তিমাত্রা

বলআপেক্ষিক শক্তিমাত্রামেসেঞ্জার কনা
সবল নিউক্লিয় বল1গ্রাভিটন
তড়িৎ চুম্বকীয় বল10−2ফোটন
দুর্বল নিউক্লিয় বল10−12বোসন
মহাকর্ষ বল10−39গ্লুয়োন
মৌলিক বলগুলোর শক্তিমাত্রা

C) সবল নিউক্লীয় বল (Strong nuclear force) কাকে বলে?

প্রোটন ও নিউট্রন দ্বারা গঠিত একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াস। এদেরকে সমষ্টিগতভাবে বলা হয় নিউক্লিয়ন ( Nucleon ) বা ভর বলে। নিউক্লিয়াসের মধ্যে সমধর্মী ধনাত্মক আধানযুক্ত প্রোটনগুলো খুব কাছাকাছি থাকায় এদের মধ্যে কুলঘের বিকর্ষণ বল প্রবল হওয়া উচিত এবং নিউক্লিয়াস ভেঙ্গে যাওয়ার কথা । কিন্তু বাস্তবে অনেক নিউক্লিয়াসই স্থায়ী। নিউক্লিয়নের মধ্যে যে মাধ্যাকর্ষণ বল কাজ করে তা এত নগণ্য যে এই বল কুলঘের বিকর্ষণ বলকে প্রতিমিত (balance) করতে পারে না ।

পরমাণুর নিউক্লিয়াসে নিউক্লিয়ন বা উপাদানগুলোকে একত্রে আবদ্ধ রাখে যে শক্তিশালী বল তাকে সবল নিউক্লিয় বল বলে। এ বল নিউট্রন ও প্রোটনকে আবদ্ধ রেখে নিউক্লিয়াস গঠন করে। এর আপেক্ষিক সবলতা ১০^৪১। এটিই মহাবিশ্বের সবচাইতে শক্তিশালী বল। নিউক্লিয়ার বোমা সেজন্য এত শক্তিশালী। সূর্য থেকে আলোর তাপও এই বল দিয়ে তৈরি হয়।

বিজ্ঞানীদের ধারণা যে নিউক্লিয়নের মধ্যে মেসন ( Meson ) নামে এক প্রকার কণার পারস্পরিক বিনিময়ের দ্বারা এই বল ক্রিয়াশীল হয়। এই বল আকর্ষণধর্মী , স্বল্প পাল্লা বিশিষ্ট (short range), চার্জ নিরপেক্ষ এবং নিউক্লিয়াসের বাইরে ক্রিয়াশীল নয়।

D) দুর্বল নিউক্লীয় বল (Weak nuclear force) কাকে বলে?

দুর্বল নিউক্লিয় বলকে ইংরেজিতে Weak nuclear force বলে। যে স্বল্প পাল্লার ও স্বল্প মানের বল নিউক্লিয়াসের মধ্যে ক্রিয়া করে অস্থিশীলতার সৃষ্টি করে তাকে দুর্বল নিউক্লিয় বল বলে। এর আপেক্ষিক সবলতা ১০^৩০।

প্রকৃতিতে বেশ কিছু মৌলিক পদার্থ রয়েছে যাদের নিউক্লিয়াস স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভেঙ্গে যায় ( যেমন ইউরেনিয়াম , থােরিয়াম ইত্যাদি )। এই সমস্ত নিউক্লিয়াসকে বলা হয় তেজস্ক্রিয় নিউক্লিয়াস। তেজস্ক্রিয় নিউক্লিয়াস থেকে তিন ধরনের রশ্মি বা কণা নির্গত হয় যাদেরকে আলফা রশ্মি,  বিটা রশ্মি এবং গামা রশ্মি বলা হয়। তেজস্ক্রিয় নিউক্লিয়াস থেকে বিটা কণা নির্গত হওয়ার সময় একই সাথে শক্তিও নির্গত হয় । তবে পরিক্ষালব্ধ ফলাফল থেকে দেখা যায় যে, নিউক্লিয়াস থেকে নির্গত শক্তির পরিমাণ বিটা কণার গতিশক্তির চেয়ে অনেক বেশি।

(2) যৌগিক বল কাকে বলে?

মৌলিক বল ব্যতীত সকল বল যৌগিক বল। অর্থাৎ এসব বল মৌলিক বল হতে উৎপন্ন হয় তাদের যৌগিক বল বলা হয়। যৌগিক বল বিভিন্ন ধরণের হয়। যথা-, ঘর্ষণ বল, স্থিতিস্থাপক বল ইত্যাদি।

A) ঘর্ষণ বল কাকে বলে?

একটি বস্তু যখন অন্য একটি বস্তুর সংস্পর্শে  থেকে একের উপর দিয়ে অপরটি চলতে চেষ্টা করে বা চলতে থাকে তখন বস্তুদ্বয়ের স্পর্শতলে গতির বিরুদ্ধে একটি বাধার উৎপত্তি হয়, এ বাধাকে ঘর্ষণ বলে। আর এই বাধাদানকারী বলকে ঘর্ষণ বল বলা হয়।

B) টান বল বা টেনশন বল কাকে বলে?

টান বলকে আদর্শ তার বা রজ্জু, যা ভর বিহীন, ঘর্ষণবিহীন, অবিচ্ছেদ্য এবং অযত তার মাধ্যমে বর্ণনা করা যেতে পারে পারে। এই আদর্শ রজ্জুকে আদর্শ কপিকলের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয় যা রজ্জুর আকৃতি পরিবর্তনে সাহায্য করে যার মাধ্যমে টান বলের ব্যাখা দেওয়া হয়।

C) স্থিতিস্থাপক বল বা স্থিতিস্থাপকতা বল কাকে বলে?

স্থিতিস্থাপক সীমার মধ্যে কোন বস্তুর উপর বল প্রয়োগের ফলে বস্তুর আকার আকৃতির বিকৃতি ঘটে এবং বল অপসারণের ফলে পূর্বের আকার ফিরে পায় সেই বল কে স্থিতিস্থাপক বল বা স্থিতিস্থাপকতা বলে।

অতিরিক্ত কিছু বলের সম্পর্কে জেনে রাখুন-

1. একক বল কাকে বলে?

একক ভরের কোন বস্তুর উপর একক ত্বরণ সৃষ্টি করতে যে বল প্রযুক্ত হয় তাকে একক বল বলে।

2. ঘূর্ণন বল কাকে বলে?

ঘূর্ণায়মান কোনো কণার ব্যাসার্ধ ভেক্টর (ঘূর্ণন বিন্দু হতে কণাটির লম্ব দূরত্ব বা অবস্থান ভেক্টর) এবং কণার উপর প্রযুক্ত বলের ভেক্টর গুণফলকে ঘূর্ণন বল বা টর্ক বলে।

3. সাম্য বল কাকে বলে?

কোন বস্তুর উপর একাধিক বল ক্রিয়া করলে যদি লব্ধি শূন্য হয় অর্থাৎ যদি বস্তুর কোন ত্বরণ না হয়, তাহলে প্রযুক্ত বলগুলোকে সাম্য বল বলে। সাম্য বল প্রযুক্ত হলে কণাটি সাম্যাবস্থায় থাকে।

4. অসাম্য বল কাকে বলে?

বল প্রয়োগের ফলে যদি কোন বস্তু সাম্যাবস্থায় না থাকে বা কোনো বস্তুর ত্বরণ শূন্য না হয়, তবে ঐ বলগুলোকে অসাম্য বল বলে।

5. জড়তা কাকে বলে?

বস্তু যে অবস্থায় আছে চিরকাল সেই অবস্থায় থাকতে চাওয়ার প্রবণতাকে জড়তা বলা হয়।

6. ঘাত বল কাকে বলে?

খুব অল্প সময়ের জন্য খুব বড় মানের যে বল প্রযুক্ত হয় তাকে ঘাত বল বলে। ক্রিকেট বলের ওপর ব্যাট দ্বারা আঘাত ঘাতবলের একটি উদাহরণ।

অর্থাৎ খুব সীমিত সময়ের জন্য খুব বড় মানের ঘাত বল প্রযুক্ত হয়। অনেক সময় এ ঘাত বলের মান এত বড় হয় যে এর ক্রিয়াকাল খুব কম হলেও এর প্রভাব দৃষ্টিগ্রাহ্য হয়। যে স্বল্প সময় ধরে ঘাত বল প্রযুক্ত হয় সেই সময় অন্যান্য বলের প্রভাব উপেক্ষা করা হয়।

7. স্পর্শ বল কাকে বলে?

যে বল সৃষ্টির জন্য দুটি বস্তুর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শের প্রয়ােজন হয় তাকে স্পর্শ বল বলে।

যখন আমরা হাত দিয়ে কোনো বস্তুকে ঠেলি বা টানি তখন আমাদের হাত বস্তুর উপর বল প্রয়োগ করে, এই ঠেলা বা টানা বল হচ্ছে স্পর্শ বল। কেননা হাত ও বস্তুর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শের ফলশ্রুতি হচ্ছে এ বল। ঘর্ষণ বল, টানবল ইত্যাদি স্পর্শ বলের উদাহরণ।

8. অস্পর্শ বল কাকে বলে?

দুটি বস্তুর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শ ছাড়াই যে বল ক্রিয়া করে তাকে অস্পর্শ বল বলে। মাধ্যাকর্ষণ বল, চৌম্বক বল, তাড়িতচৌম্বক বল, দুর্বল নিউক্লীয় বল ও শক্তিশালী নিউক্লিয় বল অস্পর্শ বলের উদাহরণ।

9. অভিকর্ষ বল কাকে বলে?

এই মহাবিশ্বের যে কোনো দুটি বস্তুর মধ্যে যে আকর্ষণ বল কাজ করে তাকে মহাকর্ষীয় বল বলে। আর এই দুটি বস্তুর মধ্যে একটি যদি পৃথিবী হয় তখনি এই বলকে অভিকর্ষজ বল বলে। অভিকর্ষজ বল “মাধ্যাকর্ষণ শক্তি” নামেও সাধারণের কাছে পরিচিত, যদিও বল ও শক্তি এক জিনিস নয়। সুতরাং অভিকর্ষ বল মহাকর্ষ বলের একটি অংশ।

পদার্থবিদ্যার বল সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন-উত্তর (FAQ)

বল কাকে বলে class 7, প্রতিমিত বল কাকে বলে, অপ্রতিমিত বল কাকে বলে, এক ডাইন বল কাকে বলে, বল ধ্রুবক কি প্রকাশ করে, টানা বল কাকে বলে, বল কাকে বলে class 9, বল ধ্রুবক এর মাত্রা, স্প্রিং এর বল ধ্রুবক কি, স্প্রিং এর বল ধ্রুবক নির্ণয়, বল ধ্রুবক কি প্রকাশ করে, বল ধ্রুবকের একক হল, শক্তির মাত্রা কি, বলের মাত্রা নির্ণয় কর

Students Care

স্টুডেন্টস কেয়ারে সকলকে স্বাগতম! বাংলা ভাষায় জ্ঞান চর্চার সমস্ত খবরা-খবরের একটি অনলাইন পোর্টাল "স্টুডেন্ট কেয়ার"। পশ্চিমবঙ্গের সকল বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের এবং সমস্ত চাকুরী প্রার্থীদের জন্য, এছাড়াও সকল জ্ঞান পিপাসু জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিবর্গদের সুবিধার্থে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: স্টুডেন্টস কেয়ার কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত !!