উপনিবেশবাদ বলতে কী বােঝাে? এর সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদের সম্পর্ক নির্ধারণ করাে | HS History 2019

পোস্টটি শেয়ার করুন
5/5 - (1 vote)

আজকে ২০১৯ সালের উচ্চমাধ্যমিকে ইতিহাস বিষয়ে আসা বড়ো প্রশ্নের উত্তর গুলি নিয়ে আলোচনা করা হল। আজকের প্রশ্ন হল উপনিবেশবাদ বলতে কী বােঝাে? এর সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদের সম্পর্ক। উত্তরটি নিচে দেওয়া হল-

উপনিবেশবাদ বলতে কী বােঝাে? এর সঙ্গে সাম্রাজ্যবাদের সম্পর্ক নির্ধারণ করাে (4+4) HS 2019

সাধারণভাবে উপনিবেশবাদ বলতে (Colonialism) বােঝায় কোনাে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র কর্তৃক কোনাে দুর্বল রাষ্ট্রের উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার তত্ত্ব। উপনিবেশবাদের রাজনৈতিক ভিত্তি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ডেভিড টমসনের অভিমত ব্যবহার করা যেতে পারে।

টমসন বলেছেন উপনিবেশ দখলের জন্য নগ্ন লড়াই ইউরােপের মধ্যে বৃহৎ শক্তিগুলির আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘাত ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রতিফলন। ইংলন্ড, জার্মানি, ফ্রান্স প্রভৃতি সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি মনে করত যে, উপনিবেশ অধিকার না করলে তাদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটবে না। সেই কারণে তারা নিজ নিজ দেশের আর্থিক শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টা চালায়।

শুধু উপনিবেশগুলির ভূখণ্ড দখল নয়, বিজিত জাতিকে (Ruled Nation) নিজ সংস্কৃতির শ্রেষ্ঠত্ব, জাতীয় গৌরব, প্রাধান্য মেনে নিতে বাধ্য করা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। ফলতঃ তারা বিজিত জাতির প্রতি অবজ্ঞা ও বৈষম্য নীতি গ্রহণ করতে শুরু করে। ঔপনিবেশিক শক্তিগুলি আমেরিকায় তাদের জাতিগত বৈষম্যনীতি গ্রহণ

Join us on Telegram

উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের সম্পর্ক:

এই দুই ধারণার সম্পর্ক ঐতিহাসিক ও অর্থনীতিবিদরা তাদের ভাবনার আলােকে ব্যাখ্যা করেন।

হসনের তত্ত্বের ব্যাখ্যা

১৯ এবং ২০ শতকের উপনিবেশ সম্প্রসারণের জন্য নতুন অর্থনৈতিক শক্তির সক্রিয়তাকে হবসন দায়ী করেন। হবসন বলেন যে সাম্রাজ্যবাদের মূল শিকড় হল উদ্বৃত্ত পুঁজির বিনিয়ােগের ক্ষেত্র অনুসন্ধান। সম্পদের অসম বণ্টনের ফলে যে বাড়তি অতিরিক্ত সঞ্চয় হয়েছিল তা থেকেই এই বাড়তি পুঁজি এসেছিল।

“Imperialism: A Study” বইতে হবসন বলেন সাম্রাজ্যবাদের চালিকাশক্তি হল আর্থিক লাভ। পুঁজিবাদীরা মুনাফা ভােগ করে প্রচুর মূলধন জমাতে থাকে। এই মূলধন উপনিবেশে বিনিয়ােগ করে আরও মুনাফা বাড়ানাের জন্য পুঁজিপতিরা তাদের দেশের সরকারকে উপনিবেশ দখলে বাধ্য করে। কাঁচামাল ও বাজারের উপর পুঁজিপতিদের একচেটিয়া অধিকার ঘিরে উপনিবেশবাদ গড়ে ওঠে।

লেনিনের তত্ত্ব:

“Imperialism: The Highest Stage of Capitalism” গ্রন্থে লেনিন সাম্রাজ্যবাদকে একচেটিয়া পুঁজিবাদের একটি নির্দিষ্ট পর্যায়রূপে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেন পুঁজিবাদের সাম্রাজ্যবাদে উত্তরণের পিছনে উৎপাদনের পুঞ্জিভবনের ভূমিকা রয়েছে।

বড় বড় শিল্পের প্রসার, উৎপাদনের বড় অংশের উপর পুঁজিপতিদের নিয়ন্ত্রণ, বাজার দখল, পুজিপতিদের জোট তৈরির মাধ্যমে পুঁজিপতিরা উৎপাদন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

লেনিন আরও বলেছেন সাবেকি পুঁজিবাদের অবাধ প্রতিযােগিতার প্রাধান্যের যুগের প্রধান বৈশিষ্ট্য পণ্য রফতানি। পুঁজিবাদের বিকাশের ফলে কয়েকটি উন্নত সাম্রাজ্যবাদী দেশের হাতে ব্যাপক পরিমাণ পুঁজি জমতে থাকে। ঐ পুঁজি আর নিজ দেশে বিনিয়োগ সম্ভব নয় বলে তারা এশিয়া ও আফ্রিকার অনুন্নত দেশগুলাের উপর বিনিয়ােগের মাধ্যমে উপনিবেশ বিস্তারে সচেষ্ট হয়।

উচ্চমাধ্যমিক ২০১৯ ইতিহাসের অন্যান্য প্রশ্ন ও উত্তর গুলি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করো

উচ্চমাধ্যমিকের বিগত বছরের প্রশ্ন ও উত্তর PDF ডাউনলোড করার জন্য এখানে ক্লিক করো।

Students Care

স্টুডেন্টস কেয়ারে সকলকে স্বাগতম! বাংলা ভাষায় জ্ঞান চর্চার সমস্ত খবরা-খবরের একটি অনলাইন পোর্টাল "স্টুডেন্ট কেয়ার"। পশ্চিমবঙ্গের সকল বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের এবং সমস্ত চাকুরী প্রার্থীদের জন্য, এছাড়াও সকল জ্ঞান পিপাসু জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিবর্গদের সুবিধার্থে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: স্টুডেন্টস কেয়ার কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত !!