১৯৫০-এর দশকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কমিউনিষ্ট চীনের প্রভাব নিরূপণ করাে
আজকে ২০১৯ সালের উচ্চমাধ্যমিকে ইতিহাস বিষয়ে আসা বড়ো প্রশ্নের উত্তর গুলি নিয়ে আলোচনা করা হল। আজকের প্রশ্ন হল ১৯৫০-এর দশকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কমিউনিষ্ট চীনের প্রভাব নিরূপণ করাে উত্তরটি নিচে দেওয়া হল-
১৯৫০-এর দশকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কমিউনিষ্ট চীনের প্রভাব নিরূপণ করাে
উঃ ১৯৪৯ সালে মাও-সে-তুং এর নেতৃত্বে চিনে সাম্যবাদী রাষ্ট্রশাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে বিশ্বরাজনীতিতে তার প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছিল। সাম্যবাদী চিন সমাজতান্ত্রিক সমাজগঠন ও তার বিকাশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পররাষ্ট্রনীতির রূপরেখা তৈরি করেছিল। বিশ্বরাজনীতিতে মার্কিনি নেতৃত্বে যে সাম্যবাদ বিরােধী অভিযান শুরু হয়েছিল, তার ফলে চিনকে ঠান্ডা লড়াইতে জড়িয়ে পড়তে হয়েছিল।
সােভিয়েত প্রতিক্রিয়া:
১৯৪৯ সালে চিনে গনপ্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার তিনমাস আগে মাও-সে-তুং জানান যে, চিনের বিদেশনীতি সােভিয়েত মডেল অনুসরণ করে চলবে। এই কারণে চিনকে সােভিয়েত স্বীকৃতি জানায়, আরও পরে পূর্ব ইউরােপও পূর্ব এশিয়ার সমাজতান্ত্রিক দেশগুলি চিনকে স্বীকৃতি জানায়। বিশ্বে সাম্যবাদী আন্দোলন সুসংহত করার জন্য এবং মার্কিন সাম্যবাদ বিরােধী নীতির মােকাবিলার জন্য সােভিয়েত ইউনিয়ন চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তােলে। চিনের শিল্পায়ন, সমরকৌশল প্রভৃতি ক্ষেত্রে সােভিয়েত নানাভাবে সাহায্য করতে থাকে এবং ১৯৫০ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি চিন সােভিয়েত মৈত্রীচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
মার্কিন প্রতিক্রিয়া:
চিনের উত্থান মার্কিনিদের বিচলিত করে। মার্কিনিরা জানত যে, গনপ্রজাতন্ত্রী চিনের উত্থান আসন্ন এবং সময়ের অপেক্ষা। তাই চিনকে ঠেকানাের জন্য মার্কিনিরা আগে চিয়াং কাইশেককে সমর্থন করেছিল। জাতিপুঞ্জের সদস্যপদলাভের সময়ও মার্কিনিরা চিনের বিরােধিতা করে। কোরিয়া যুদ্ধে চিন ১৯৫০ সালে কোরিয়াকে সমর্থন করে ও জাতিপুঞ্জের বাহিনির সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই কারণে ১৯৫০ এর দশকে মার্কিনিদের একমাত্র ও অন্যতম লক্ষ্য ছিল চিনে কমিউনিষ্ট শাসনের অবসান।
তৃতীয় বিশ্বের প্রতিক্রিয়াঃ
১৯৪৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ১৯৫০ সালের জুন মাসের মধ্যে বিশ্বের ১২টি দেশ গণপ্রজাতন্ত্রী চিনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। চিন প্রথম থেকেই এশিয়া ও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলাের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। ১৯৫৫ সালে বান্দুং এ চলা ১৮-২৪ এপ্রিলের আফ্রো-এশিয়া সম্মেলনে চিনকে আমন্ত্রণ জানানাে হয় এবং উপনিবেশ বিরােধী এক সাধারণ রাষ্ট্রজোট তৈরি হয়। এমনকি চিন আফ্রিকার মানুষের সাম্রাজ্যবাদ বিরােধী সংগ্রামকে সমর্থন করেছিল। ১৯৬৪ সালে চেী-এন-লাই এর আফ্রিকা সফরের মধ্য দিয়ে আফ্রিকায় চিনের ভাবমুর্তি অনেকটা উজ্জ্বলভাবে ফুটে উঠেছিল।
উচ্চমাধ্যমিক ২০১৯ ইতিহাসের অন্যান্য প্রশ্ন ও উত্তর গুলি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করো
উচ্চমাধ্যমিকের বিগত বছরের প্রশ্ন ও উত্তর PDF ডাউনলোড করার জন্য এখানে ক্লিক করো।
Source: wbchse.nic.in