জনবন্টনে ভূ-প্রকৃতির প্রভাব আলোচনা করো। কার্যাবলী অনুযায়ী পৌরবসতির শ্রেণিবিভাগ করো। ক্ষুদ্র ও বৃহৎ পরিকল্পনা অঞ্চলের প্রভেদ কী?
আজকে ২০১৫ সালের উচ্চমাধ্যমিকে ইতিহাস বিষয়ে আসা বড়ো প্রশ্নের উত্তর গুলি নিয়ে আলোচনা করা হল। আজকের প্রশ্ন হল জনবন্টনে ভূ-প্রকৃতির প্রভাব আলোচনা করো। কার্যাবলী অনুযায়ী পৌরবসতির শ্রেণিবিভাগ করো। ক্ষুদ্র ও বৃহৎ পরিকল্পনা অঞ্চলের মধ্যে প্রভেদ কী? উত্তরটি নিচে দেওয়া হল-
জনবন্টনে ভূ-প্রকৃতির প্রভাব
জনবন্টনে প্রাকৃতিক নিয়ন্ত্রকগুলির মধ্যে ভূ-প্রাকৃতিক প্রভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভূমিভাগের বন্ধুরতা, কৃষিকাজ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্তরায় সৃষ্টি করে এবং ভূমিরূপের অধিক উচ্চতা জলবায়ুকে শীতল করে তুলেছে বলে পার্বত্য অঞ্চলে বিরল জনবসতি গড়ে ওঠে। যেমন ভারতের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল এবং পশ্চিমঘাট পার্বত্য অঞ্চলে বিরল জনবসতি দেখা যায় ।
মালভূমির রুক্ষতা, বন্ধুরতা এবং মাটির অনুর্বরতা কৃষিকাজকে সীমিত করে। প্রাচীন মালভূমি অঞ্চলে খনিজের প্রাচুর্যতা এবং খনিজ ভিত্তিক শিল্পের বিকাশের জন্য মাঝারি বসতি গড়ে উঠেছে। ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমির বিভিন্ন অংশে খনিজ উত্তোলন ও খনিজভিত্তিক শিল্পের উপর ভিত্তি করে মাঝারি জনবসতি ও একাধিক শিল্প শহরের বিকাশ ঘটেছে।
সমভূমি অঞ্চলের উন্নত কৃষিকাজ, পর্যাপ্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিস্তীর্ণ বৈচিত্র্যহীণ সমতলভূমি, পানীয় জলের সুবন্দোবস্ত এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পের বিকাশ ঘটায় ঘনবসতি গড়ে উঠেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নদী অববাহিকার সমভূমিতে এই সব কারণে পৃথিবীর মোট জনবসতির প্রায় 60% বসবাস করে।
কার্যাবলী অনুযায়ী পৌরবসতির শ্রেণিবিভাগ
কার্যাবলীর ভিত্তিতে পৌরবসতিকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। এগুলি হল-
(i) প্রশাসনিক শহর- ভারতের নতুন দিল্লি, (ii) প্রতিরক্ষা শহর — ভারতের কোচি, (iii) সাংস্কৃতিক শহর— পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতন, (iv) উৎপাদনভিত্তিক শহর— গুজরাটের আহমেদাবাদ, (v) বন্দর শহর— ওড়িশার পারাদ্বীপ (vi) ব্যাবসা ও বাণিজ্য কেন্দ্র— উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি, (vii) স্বাস্থ্য শহর— চেন্নাই প্রভৃতি।
ক্ষুদ্র ও বৃহৎ পরিকল্পনা অঞ্চলের প্রভেদ
পার্থক্যের ভিত্তি | ক্ষুদ্র পরিকল্পনা অঞ্চল | বৃহৎ পরিকল্পনা অঞ্চল |
---|---|---|
(i) বিস্তৃতি | ক্ষুদ্র পরিকল্পনা অঞ্চল গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলাস্তর পর্যন্ত গঠিত হয়। এক্ষেত্রে পরিকল্পনা একই জেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ। | বৃহৎ পরিকল্পনা অঞ্চল বৃহৎ অঞ্চল জুড়ে গঠিত হয়। এক্ষেত্রে প্রশাসনিক ও প্রাকৃতিক বিভিন্নতা কোনো বাধা |
(ii) নিয়ন্ত্রণ | স্থানীয় রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে জেলা পরিষদ, পঞ্চয়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয় । | পরিকল্পনা কমিশন ও কেন্দ্ৰীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়িত করা হয় । |
(iii) তাৎপর্য ও উন্নয়ন | স্থানীয় সমস্যা যথেষ্ট গুরুত্বলাভ ও সমাধানের জন্য স্থানীয় স্তরে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ঘটে। | জাতীয় সমস্যা সমাধানের জন্য করে জাতীয়স্তরে পরিকল্পনা এবং অর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটে। |
উচ্চমাধ্যমিক ২০১৫ ইতিহাসের অন্যান্য প্রশ্ন ও উত্তর গুলি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করো
উচ্চমাধ্যমিকের বিগত বছরের প্রশ্ন ও উত্তর PDF ডাউনলোড করার জন্য এখানে ক্লিক করো।
Source: wbchse.nic.in