এলাচের উপকারী গুণ || প্রতিদিন একটা বা দুটো করে এলাচ নিয়ম করে খাওয়া উচিৎ

পোস্টটি শেয়ার করুন
Rate this post

এলাচের উপকারী গুণ

গৃহস্থের রান্নায় এলাচ না দিলে যে রান্নার স্বাদটাই খোলে না এটা আপনারা সকলেই জানেন। এমনকি এটাও জানেন, ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় প্রতিটি রান্নায় যে গরম মশলা ব্যবহার করা হয়, তার একটি প্রধান উপকরণ হল উপাদানই এলাচ। যেকোনো রান্না, তথা পায়েস বা মিষ্টিতেও এলাচ দিলে সেই রান্নার একটা আলাদা স্বাদ বহন করে। আবার এমনও হয়, খাবার খেতে বসলে মুখে এলাচ চলে গেলে মুখের স্বাদটাই মাটি হয়ে যায় অনেকের। তখন ভাবেন এলাচ কি খাওয়ারে না দিলেই নয়! কিন্তু আপনার ধারণা নেই এলাচের উপকারী গুণ সম্পর্কে। প্রতিদিন একটা বা দুটো করে এলাচ নিয়ম করে খেলে অনেক সমস্যা ও রোগের হাত থেকে সহজ সমাধান মিলতে পারে।

আসুন আগে জেনে নেওয়া যাক এলাচের উপকারী গুণ সম্পর্কে-

♦ এলাচের উপকারী গুণ

১. আমাদের রক্তের ফ্লুইডে উপস্থিত একটি অন্যতম জরুরি উপাদান হল পটাশিয়াম। এলাচে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা আমাদের হার্টরেটকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এছাড়াও এলাচের ডিউরেটিক উপাদান উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কমিয়ে আনতে সক্ষম। দেহের বাড়তি ফ্লুইড দূর করে এলাচ উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে। রক্তবাহে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতেও এলাচ সাহায্য করে।

Join us on Telegram

এলাচের রক্ত পাতলা করার দারুণ একটি গুন রয়েছে। আপনারা অনেকেই রক্তনালীতে রক্ত জমে যাওয়ার সমস্যায় ভুগে থাকে। ফলে রক্ত পাতলা করার গুনটি এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে।

২. আপনার মুখে কি সুর্গন্ধ হয়? বুঝে উঠতে পারছেন না কিভাবে মুখের দূর্গন্ধ দূর করবেন? আপনার সমস্যা সমাধান করার জন্য এলাচ খেতে পারেন। খাবারের ঠিকমতো হজম না হওয়ার ফলেও অনেক সময় মুখে দুর্গন্ধ হয়। মুখের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া আশ্রয় গ্রহণ করে। এলাচ মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।

৩. রোজ খাবার পর যদি একটা করে এলাচ খান তা গ্যাসের সম্ভাবনাকে কমায় ও হজমশক্তি বাড়ায়পেটের নানা সমস্যা এবং হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে এলাচ অনেক কার্যকরী। এলাচ আমাদের মিউকাস মেমব্রেনকে আরাম দেয় ফলে অ্যাসিডিটি ও পেট খারাপের প্রবণতা কমে। ফলে এলাচ খেলে বুক জ্বালাপোড়া, বমি ভাব, পেট ফাঁপা, অ্যাসিডিটির হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। রোজ এক কাপ হালকা গরম জলে একটি এলাচ থেঁতো করে ফেলে নিয়ম করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

৪. দেহের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে দিতে এলাচের জুড়ি নেই। এলাচে থাকা ভিটামিন এ, বি, সি, নিয়াসিন, রাইবোফ্ল্যাভিন রক্তকে পরিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে। শরীরের যাবতীয় বর্জ্য পদার্থ, যেমন বাড়তি ক্যালশিয়াম, ইউরিয়া ও অন্যান্য টক্সিনকে কিডনির মাধ্যমে বের করে দিয়ে শরীরকে পরিষ্কার করে ডি-টক্সিফাই করতেও এলাচ সাহায্য করে।

৫. গবেষোণায় দেখা গিয়েছে ভারতীয় মেয়েরা কম বয়স থেকেই অ্যানিমিয়াতে ভোগেন। মেয়েদের একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা হল অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা। রক্তাল্পতা দূর করার জন্য আপনাকে নিয়মিত এলাচ খাওয়া দরকার। এলাচে লোহা মাইক্রো-নিউট্রিয়েন্ট হিসেবে মজুত থাকে, যা অ্যানিমিয়াতে উপকার দেয়।

এলাচের উপকারী গুণ
এলাচের উপকারী গুণ

৬. সর্দিকাশি হলে আপনি ঘরোয়া টোটকা হিসেবে শুধুমাত্র এলাচ বা এলাচ দেওয়া চা খেতে পারেন।

৭. গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এলাচ খাওয়ার অভ্যাস ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।

৮. এলাচের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকে বয়সের ছাপ, রিংকেল,বলিরেখা ইত্যাদি পড়তে বাঁধা প্রদান করে। এলাচে থাকা এসেনশিয়াল অয়েল বিভিন্ন কসমেটিক্স সামগ্রীতে ব্যবহার করা হয়। ঠোঁটকে মসৃণ ও নরম রাখতেও এলাচের এসেনশিয়াল অয়েল কাজে লাগে।

৯. শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা হুপিংকাশি, অ্যাজমা, ফুসফুস সংক্রমণের মতো সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য এলাচ খুবই উপকারী।

১০. কালো এলাচ হৃদরোগ প্রতিরোধ করে, হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এ ছাড়া এলাচ রক্তসঞ্চালনে সহায়ক।

১১. গরম জলে এলাচ গুড়ো ও মধু দিয়ে ফুটিয়ে চা বানিয়ে খেলে মনের বিষণ্ণতা দূর হয়।

১২. পেট ফাঁপা হলে এলাচ গরম জলে মিশিয়ে সেই জল খেলে পেট ফাঁপা চলে যাবে।

১৩. চোখের জ্বালাপোড়া কমাতে এলাচ দানার সঙ্গে সমপরিমাণ চিনি মিশিয়ে পিষে ওই গুঁড়া খেলে চোখের জ্বালাপোড়া কমে যাবে।

১৪. বারংবার বমি হতে থাকলে এলাচের ছোবড়া পুড়িয়ে ওই ছাই মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে বমি বন্ধ হবে।

১৫. প্রস্রাব হলুদ হলে এলাচের গুঁড়ার সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে প্রস্রাব এর সমস্যা দূর হয় ।

Students Care

স্টুডেন্টস কেয়ারে সকলকে স্বাগতম! বাংলা ভাষায় জ্ঞান চর্চার সমস্ত খবরা-খবরের একটি অনলাইন পোর্টাল "স্টুডেন্ট কেয়ার"। পশ্চিমবঙ্গের সকল বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের এবং সমস্ত চাকুরী প্রার্থীদের জন্য, এছাড়াও সকল জ্ঞান পিপাসু জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিবর্গদের সুবিধার্থে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।  

error: স্টুডেন্টস কেয়ার কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত !!